রূপনগরে নিহত 'মেজর মুরাদ' সম্পর্কে পুলিশ কী ধারণা করছে
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় শুক্রবার এক পুলিশি অভিযানে যে সন্দেহভাজন জঙ্গী নিহত হয়, পুলিশ এখন তার পরিচয় নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।

ছবির উৎস, Focus Bangla
মীরপুরের রূপনগরে শুক্রবার অভিযান চালায় পুলিশ
পুলিশ কর্মকর্তারা দাবি করছেন, 'মেজর মুরাদ' নামে পরিচিত এই ব্যক্তি নিষিদ্ধ জঙ্গী গোষ্ঠী জেএমবির সামরিক অধিনায়ক।
মিরপুরের রূপনগরের একটি বাড়িতে পুলিশ হানা দেওয়ার পর গোলাগুলিতে তিনি নিহত হন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এই অভিযানের সময় তিন জন পুলিশ সদস্যও আহত হন।
ঢাকার রূপনগর আবাসিক এলাকায় ৩৩ নম্বর সড়কের ৩৪ নম্বর বাসায় এই মুরাদ নামে ব্যক্তি জুনের ১লা তারিখে বাসা ভাড়া নেয়।
ছয়তলা ভবনের ছয়তলার ফ্ল্যাটে তিনি স্ত্রী সহ থাকতেন। পুলিশ বলছে গত ২৭ শে অগাস্ট নারায়ণগঞ্জের অভিযানে তামীম চৌধুরী নিহত হওয়ার পর মুরাদ স্ত্রী নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এবং গতকাল শুক্রবার সে একা ঐ বাসায় আবার আসে। এই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তখন সেখানে পুলিশ অভিযান চালায়।
নিহত এই ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তেমন কিছু এখনও জানা যাচ্ছে না।
পুলিশ কর্তৃপক্ষ বলছে বাড়িওয়ালার কাছে যে ফর্ম পূরণ করে দিয়েছিলেন তিনি, সেখানে নাম দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর।
আবার খবর পাওয়া যাচ্ছে তিনি সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। তবে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোন নিশ্চয়তা পাওয়া যায় নি।
এদিকে অসমর্থিত একটি সূত্র বলছে সেনাবাহিনীতে শরীরের সনাক্তকরণ চিহ্ন যেটা নির্ধারণ করা হয় সেখানে এই ব্যক্তির ডান হাঁটুর ওপরে একটা কাটা দাগ ছিল বলে বলা হচ্ছে। এবং এই নিহত ব্যক্তির ডান হাঁটুতেও একই রকম কাটা দাগ রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
তবে পুলিশের একজন উদ্ধতন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম গতকাল জানিয়েছিলেন নিহত কথিত মেজর মুরাদ আসলে সেনাবাহিনীর একজন সাবেক সৈনিক। গুলশান এবং শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলায় অংশগ্রহণকারীদের এই ব্যক্তিই প্রশিক্ষণ দিয়েছে বলে পুলিশ সন্দেহ করছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, গাইবান্ধার চরে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশ বলছে, নিহত মুরাদ নব্য জেএমবির সেকেন্ড ইন কমাণ্ড হিসাবে কাজ করতেন। তিনি নারায়ণগঞ্জে সম্প্রতি নিহত জেএমবি নেতা তামিম চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছিলেন।
পুলিশ আজ বলছে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য এখন হাতের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়েছে যা বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডেটাবেজের সাথে মিলিয়ে দেখা হবে।
পুলিশ আশা করছে সেখান থেকে এবং জাতীয় পরিচয় পত্র থেকে তার সম্পর্কে কিছু তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
এদিকে মুরাদের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন ময়নাতদন্তে তারা দেখেছেন তার শরীরে নয়টি গুলির আঘাত আছে। সব গুলো শরীরের একদিক থেকে ঢুকে আরেক দিকে বের হয়েছে। কোন গুলি তারা উদ্ধার করেননি শরীর থেকে।
এছাড়া রূপগঞ্জের আবাসিক এলাকায় এখনও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হয়েছে সেখানে । বিশেষ করে ঐ ভবনের দিকে বিশেষ নজর রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।