ইতিহাসের সাক্ষী:

ইতিহাসের সাক্ষী:

ইতিহাসের সাক্ষী: নাইরোবিতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে বোমা হামলা

১৯৯৮ সালের অগাষ্ট মাসে নাইরোবিতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে বোমা হামলা চালিয়েছিল আল কায়েদা। হামলায় নিহত হন দুশোর বেশি মানুষ। এটি ছিল আল কায়েদার প্রথম কোন বড় সন্ত্রাসী হামলা। তখনো পর্যন্ত বেশিরভাগ মানুষ আসলে আল কায়েদার নামই শোনেনি।

১৯৯৮ সালের সা্তই অগাষ্টের সকাল। দিনটি ছিল শুক্রবার। জর্জ মিমবা সেদিন নাইরোবিতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের দ্বিতীয় তলায় তার ডেস্কে বসেই কাজ করছিলেন।

হঠাৎ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো নাইরোবি।

"আমি আপনাকে ভাষায় বর্ণনা করতে পারবো না সেই শব্দ। বিকট সেই বিস্ফোরণ যেন আমাকে উপরে ছুঁড়ে দিল আর আমার মাথায় ভেঙ্গে পড়লো সিলিং। আমি তার নীচে চাপা পড়লাম। এর পর পুরো ভবনটি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেল। আমি লোকজনের চিৎকার আর কান্না শুনতে পাচ্ছিলাম। লোকজন চিৎকার করে সাহায্য চাইছিল।"

জর্জ মিমবা ছিলেন মার্কিন দূতাবাসের ইনফরমেশন সিস্টেমস ম্যানেজার। সেদিনের সেই হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া সৌভাগ্যবানদের একজন। সেদিনের ঘটনার স্মৃতিচারণ করেছেন তিনি বিবিসির 'ইতিহাসের সাক্ষী' অনুষ্ঠানে।

মার্কিন দূতাবাসের অবস্থান নাইরোবির প্রাণকেন্দ্রে। এটি পাহারা দিত কেনিয়ান নিরাপত্তা রক্ষীরা। সঙ্গে মার্কিন মেরিন সেনারাও থাকতো। কিন্তু সেসময় নাইরোবিতে কেউই ভাবতে পারেনি নি যে সেখানে মার্কিন দূতাবাস হামলার ঝুঁকিতে আছে।

কিন্তু সেদিন সকাল দশটার দিকে বন্দুক আর গ্রেনেড সজ্জিত দুজন আল কায়েদা জঙ্গী একটি ট্রাক বোমা নিয়ে হাজির হলো মার্কিন দূতাবাসে। তাদের পরিকল্পনা ছিল দূতাবাসের পেছনের গেট দিয়ে তারা ট্রাক বোমাটি ভূগর্ভস্থ পার্কিং এ নিয়ে বিস্ফোরণ ঘটাবে। কিন্তু গেটের কেনিয়ান রক্ষীরা তাদের ভেতরে ঢুকতে বাধা দিল। তখন সেখানেই তারা বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।

নাইরোবিতে সেদিনের বোমা হামলায় নিহত হয় ২১৮ জন, আহত হয় প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। নিহতদের লাশ সনাক্ত করতে যাদের ডেকে আনা হয়েছিল, তাদের একজন ছিলেন জর্জ।

জর্জ মিমবা তার আঘাত থেকে সেরে উঠার পর মার্কিন দূতাবাসে তার কাজে ফিরে যান। তিনি এখনো সেখানেই কাজ করছেন।

ইতিহাসের সাক্ষীর এবারের পর্বটি পরিবেশন করেছেন মোয়াজ্জেম হোসেন: