
সুপার সাইক্লোন আম্পান সম্পর্কে সর্বশেষ যা জানা যাচ্ছে
বঙ্গোপসাগর ঘেঁষা বাংলাদেশ ও ভারতের সীমানায় আঘাত হানতে যাচ্ছে শক্তিশালী একটি ঘূর্ণিঝড়। বিবিসি বাংলার লাইভ পাতায় এই ঝড় নিয়ে দিনভর যেসব খবর ছিল। খবরের আপডেট জানতে চোখ রাখুন বিবিসি বাংলার পাতায়।
সরাসরি রিপোর্টিং
রিপোর্ট করছেন রায়হান মাসুদ এবং মানসী বড়ুয়া
time_stated_uk
সুপার সাইক্লোন আম্পান সম্পর্কে সর্বশেষ যা জানা যাচ্ছে
আম্পানে ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা পরিস্থিতির আশংকা
ভারতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হিসাব অনুযায়ী দক্ষিণ ২৪ পরগণার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে এলাকার দুই লাখ মানুষকে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগের পশ্চিমবঙ্গের আঞ্চলিক দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী বাপক জলোচ্ছ্বাস হতে পারে এবং ঢেউয়ের উচ্চতা ৪ থেকে ৫ মিটার হতে পারে এবং ১১ বছর আগে আইলার সময় যে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল এবারেও তেমনটা হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে ।
সুন্দরবন ঘেঁষেই উপকূলে আছড়ে পড়বে আম্পান
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ তাদের সবশেষ পূর্বাভাসে জানিয়েছে, সুপার সাইক্লোন আম্পান সুন্দরবন বা তার খুব কাছ ঘেঁষেই উপকূলে আছড়ে পড়বে।
মঙ্গলবার বিকেলে টুইট করে তারা আরও জানায়, ২০শে মে বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যেই এই 'ল্যান্ডফল' ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সুন্দরবনের মোটামুটি এক তৃতীয়াংশ ভারতের দিকে, আর বাকি দুই তৃতীয়াংশ বাংলাদেশের ভূখন্ডে। ফলে দুই দেশের সীমান্তের কাছাকাছি কোনও এলাকা দিয়েই এই ঘূর্ণিঝড়টিআঘাত হানবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় এর হাওয়ার বেগ হবে ঘন্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার – পরে যার তীব্রতা বেড়ে ঘন্টায় ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
হিমাওয়ারি ৮ উপগ্রহ থেকে তোলা ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ছবি।
হিমাওয়ারি ৮ উপগ্রহ থেকে তোলা ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ছবি থেকে দেখুন কীভাবে ১৬ই মে থেকে ১৯শে পর্যন্ত ঝড়টি এগিয়েছে।
Video content
বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন আম্পান
সুপার সাইক্লোন আম্পান আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে।
মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেবার কাজ চলছে।
ভিডিওতে দেখুন বাংলাদেশে উপকূলীয় জেলাগুলোর চিত্র।
Video content
এবারের ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা 'ভীষণ চ্যালেঞ্জিং'
সরকারের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির অপারেশন বিভাগের পরিচালক নূর ইসলাম খান বিবিসি বাংলার কাদির কল্লোলকে বলেছেন, আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষকে নেয়া এবং সেখানে নেয়ার পর সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে তাদেরই সন্দেহ রয়েছে।
তিনি বলছেন যে মানুষরা আসবে, তাদের মধ্যে দুই-একজন করোনা আক্রান্ত থাকতেও পারে। সেরকম হলে তাদের ঠিকমতো পরীক্ষা করা, তাপমাত্রা দেখা - এই বিষয়গুলো তাদের কাছে ''ভীষণ চ্যালেঞ্জিং'' হয়ে দাঁড়াবে।
কাদির কল্লোলের বিস্তারিত রিপোর্ট পড়তে ক্লিক করুন।
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হচ্ছে
সরকারের লক্ষ্য আজ রাত আটটার মধ্যে বিশ লাখ মানুষকে ১২ হাজারের বেশি আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পান এখন কোথায় অবস্থান করছে
পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ’আম্পান’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের সর্বশেষ বুলেটিনে জানিয়েছে এটি আজ বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কি.মি.দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪০ কি.মি.দক্ষিণপশ্চিমে, মংলাসমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭০ কি.মি.দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৬৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আম্পান খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ২০শে মে ২০২০ বিকাল/সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে ।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ২০০ কি.মি. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
জানানো হয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সম্ভাব্য গতিপথ
আম্পান পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় নৌবাহিনী প্রস্তুত বলে জানাচ্ছে
ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’পরবর্তী জরুরি উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২৫টি জাহাজ, মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ও হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে আইএসপিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় চট্টগ্রাম, খুলনা ও মংলা নৌঅঞ্চলে নৌবাহিনীর ২৫টি জাহাজ প্রস্তুত রেখেছে বলে জানিয়েছে।
সেইসাথে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুরসহ উপকূলীয় দূর্গত এলাকাগুলোতে মোতায়েনের জন্য নৌ কন্টিনজেন্ট প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় দুর্গত এলাকাগুলোতে জরুরি চিকিৎসা সহায়তার জন্য বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশে বিশ লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার কাজ চলছে
বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. এনামুর রহমান বলেছেন তেরটি উপকূলীয় জেলার বিশ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেছেন আজ রাত ৮টার মধ্যে এই বিশ লাখ মানুষকে ১২ হাজার সাইক্লোন শেল্টারে সরিয়ে নিয়ে যাবার কাজ সরকার শুরু করেছে।
তবে অন্যান্য কর্মকতারা বলছেন এখনও পর্যন্ত হাজার পাঁচেক মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া সম্ভব হয়েছে।
বুধবার সকাল থেকে সকলকে ঘরে থাকার নির্দেশ মমতা বানার্জির
ভারতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কিছুক্ষণ আগে শেষ হওয়া সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন ঘূর্ণিঝড় আম্পান দক্ষিণ ২৪ পরগণায় সবথেকে বেশি আঘাত হানতে পারে বলে তারা আশংকা করছেন।
এছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে উত্তর ২৪ পরগণা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং কলকাতা।
তিনি আহ্বান জানিয়েছেন যাদের পাকা বাড়ি আছে আগামী কাল বেলা ১১টার পর থেকে তারা যেন বাড়িতে থাকেন এবং পরশু সকাল অবধি বাড়ি থেকে বের না হন।
কোভিড ১৯ প্রাদুর্ভাবের কথা মাথায় রেখে সাইক্লোন শেল্টারে সামাজিক দূরত্ব বিধি মানার এবং হাত ধোয়ার ব্যবস্থা মানার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি।
পশ্চিমবঙ্গে আম্পান নিয়ে মাইকিং চলছে জেলায় জেলায়
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণার বারুইপুর জেলায় মাইকিং চলছে আম্পান নিয়ে এলাকাবাসীকে সতর্ক করতে।
Video content
আম্পান মোকাবেলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নির্দেশিকা
আম্পানের মোকাবেলায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রশাসন একটি নির্দেশিকা জারি করেছে।
পশ্চিমবঙ্গের দীঘা থেকে সুন্দরবনের সমস্ত উপকূলবর্তী এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনীর সদস্যরা।
সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সাইক্লোন সেন্টারে সরানো হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকা ছাড়াও কলকাতাতেও ব্যাপক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনারয়েছে আম্পানের।
মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নেবার জন্য শ্যামনগরে মাইকিং চলছে
শ্যামনগরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল হাই সিদ্দিকি স্থানীয় মানুষজনকে আম্পান সম্পর্কে সতর্ক করার এবং তাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাবার আহ্বান জানিয়ে মাইকিং করছেন।
Video content
ব্রেকিংপশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক সংখ্যায় মানুষ সরিয়ে নেয়া শুরু
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন আম্পান ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতিতে এখনও পর্যন্ত মোট তিন লাখ মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগণায় দুই লাখ, উত্তর ২৪ পরগণায় ৫০ হাজার, পূর্ব মেদিনীপুরে ৪০ হাজার এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ১০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলন চলছে। বিস্তারিত আসছে।
বাংলাদেশে হয়ে যাওয়া পাঁচটি ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বিবেচনা করা হয় ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় এবং ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়কে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক শাহ আলম বলেন, সবচেয়ে প্রলয়ঙ্করী ছিল ১৯৭০ এবং ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়। এরপরে তিনি সাইক্লোন সিডরের কথা উল্লেখ করেন।
১৯৭০ সালের ১২ই নভেম্বর সবোর্চ্চ ২২৪ কিলোমিটার বেগে চট্টগ্রামে আঘাত হানা এই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে ১০-৩৩ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল।
যে হিসেব পাওয়া যায় তাতে ১৯৭০ এর সালের প্রবলতম ঘূর্ণিঝড়ে ৫ লাখ মানুষ নিহত হয়।
সেসময় ১০-৩৩ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল এবং অসংখ্য গবাদি পশু এবং ঘরবাড়ি ডুবে যায়।
এখানে ক্লিক করলে পাবেন বাংলাদেশে হয়ে যাওয়া পাঁচটি ঘূর্ণিঝড়ের কথা
বাংলাদেশের কোন কোন জেলায় আঘাত করবে আম্পান
মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে এখন পর্যন্ত সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
মূলত আঘাত হানবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ।
বিবিসির আবহাওয়া বুলেটিন্ থেকে সর্বশেষ
আম্পান মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি নিয়ে সর্বশেষ আপডেট
বাংলাদেশের ১৪০ টি উপজেলাকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
এসব উপজেলায় ১৪’শর বেশি ইউনিয়ন।
আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা ১০৪০৯টি।
এখন পর্যন্ত মেডিকেল টিম কাজ করছে ১৭৫৭টি।