ছেলে না পেলে প্রাণভিক্ষার সিদ্ধান্ত না: মীর কাশেম
- কাদির কল্লোল
- বিবিসি বাংলা, ঢাকা

ছবির উৎস, AFP
জামায়াতের অর্থের মূল যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত মীর কাশেম আলীর ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে মঙ্গলবার সর্বোচ্চ আদালত তার রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ।
বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলী তার প্রাণভিক্ষার আবেদনের সঙ্গে নিখোঁজ ছেলের উদ্ধারের শর্ত যুক্ত করেছেন।
তার ছেলেকে ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত এবিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।
বুধবার গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে তার সাথে দেখা করার পর তার স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন সাংবাদিকদের এমন শর্তের কথা জানিয়েছেন।
আহমেদ বিন কাশেম সপ্তাহ তিনেক আগে নিখোঁজ হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
কারা মহাপরিদর্শক বলেছেন, সিদ্ধান্ত নিতে মীর কাশেম আলীকে একটা যৌক্তিক সময় দেয়া হবে। এই সময়টা সর্বোচ্চ সাতদিন হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
মঙ্গলবার আপিল বিভাগ এই জামায়াত নেতার ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে তার রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
কাশিমপুর কারাগারে মীর কাশেম আলীর সাথে তার পরিবারের সদস্যরা দেখা করেন বুধবার দুপুরে। প্রায় দু`ঘন্টা সময় ধরে তারা কারাগারের ভিতরে ছিলেন।
ছবির উৎস, Getty Images
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনকারী উপস্থিত আদালত প্রাঙ্গণেও।
পরে মীর কাশেম আরীর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, সপ্তাহ তিনেক আগে নিখোঁজ হওয়া ছেলে আহমেদ বিন কাশেমকে না পাওয়া পর্যন্ত তার স্বামী প্রাণভিক্ষার আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন না।
তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "উনি পরিবারের সদস্যদের সাথে পরামর্শ করতে চেয়েছেন। উনার ছেলে পরিবারের সদস্য এবং একইসাথে আইনজীবী হিসেবে ছেলে উনার মামলার সব বিষয় দেখতো।''
''সেই ছেলেকে গত ৯ই অগাষ্ট সাদা পোশাকে একদল লোক উঠিয়ে নিয়ে গেছে। সেজন্য উনি অপেক্ষা করছেন। ছেলেকে পাওয়া গেলে উনি ছেলের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন।"
এদিকে, ঢাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের আইজি শহিদুল হকের এক সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি মীর কাশেম আলীসহ তিনজন যুদ্ধাপরাধীর নিখোঁজ হওয়া সন্তানদের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন তুলেছিলেন। আইজি বলেছেন, নিখোঁজদের ব্যাপারে পুলিশে অভিযোগ করা হলে তাদের খুঁজে বের করতে পুলিশ সহযোগিতা করবে।
জামায়াতের অর্থের মূল যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত মীর কাশেম আলীর ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে মঙ্গলবার সর্বোচ্চ আদালত রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়েছে । বুধবার সকালে মীর কাশিম আলীকে রায় পড়ে শোনানো হয়।
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখারউদ্দিন বলেছেন, মীর কাশেম আলী প্রাণভিক্ষা চাওয়া না চাওয়ার প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে সময় চেয়েছেন। সেজন্য তাকে একটা যৌক্তিক সময় দেয়া হচ্ছে। এই সময়টা সর্বোচ্চ সাতদিন হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
একইসাথে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে আবার মীর কাশেম আলীর সিদ্ধান্ত জানতে চাওয়া হবে। এরপর করণীয় ঠিক করা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, এখন কারাগারে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলী সিদ্ধান্ত জানতে চাওয়া হবে।
তবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে মীর কাশেম আলী তার নিখোঁজ ছেলেকে পাওয়ার ব্যাপারে যে শর্ত দিয়েছেন, সেই প্রেক্ষাপটে লম্বা সময় দেয়ার সুযোগ নেই বলে কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন।