মীর কাসেম আলীর শর্ত নিয়ে সরকার ভাবছে না
- কাদির কল্লোল
- বিবিসি বাংলা, ঢাকা

ছবির উৎস, AFP
প্রাণভিক্ষা চাওয়া না চাওয়ার প্রশ্নে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।
বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন কিনা, সেই সিদ্ধান্ত জানার জন্য কর্তৃপক্ষ আরও অপেক্ষা করার কথা বলছে।
তবে অপেক্ষার সুনির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ বলা হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার সকালে দ্বিতীয় বারের মতো কারা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে এই জামায়াত নেতা আরো সময় চেয়েছেন।তিনি নিখোঁজ হওয়া ছেলেকে পাওয়ার শর্ত দিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, শর্তকে তারা বিবেচনা করছেন না।সিদ্ধান্তের জন্য তারা একটা যৌক্তিক সময় দিচ্ছেন।
গত মঙ্গলবার মীর কাসেম আলীর ফাসি বহাল রেখে সর্বোচ্চ আদালত রিভিউ খারিজ করে দিয়েছে।
ফাঁসি বহাল রাখা সম্পর্কিত সর্বোচ্চ আদালতের রায় বুধবার যখন মীর কাসেম আলীকে পড়ে শোনানো হযেছে,তখন প্রাণভিক্ষা চাওয়া না চাওয়ার প্রশ্নে তিনি সময় চেয়েছিলেন।
তিনি তার নিখোঁজ ছেলেকে খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত সিদ্ধান্ত দেবেন না বলে শর্ত দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে কারা কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয় দফায় সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে তিনি আরো সময় চেয়েছেন।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, "দুই দিন আগে রায় প্রকাশ হয়েছে। ঝুলিয়েতো দেয়া হয়নি।তাকে সময় দেয়া হয়েছে।প্রাণভিক্ষা চাওয়ার জন্য তাকে সময় দেয়া হচ্ছে।অন্য কিছুর জন্য নয়।"
কিন্তু সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য কতটা সময় তাকে দেয়া হবে, সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার যে আইনে হয়েছে,তাতে জেলকোড প্রযোজ্য নয়।
এখানে জেলকোডের সময়সীমা কার্যকর হচ্ছে না।কারা মহাপরিদর্শক বুধবার বলেছিলেন, সিদ্ধান্ত নিতে যৌক্তিক সময় সর্বোচ্চ সময় সাতদিন হতে পারে।
মন্ত্রী এই সময়ের কথা বলছেন না।অবশ্য সরকার তাড়াহুড়ো করতে চাইছে না বলে মনে হচ্ছে।
এদিকে, মীর কাসেম আলীর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন বলেছেন, "আমরা মূলত চাচ্ছি, আমাদের ছেলেকে হাজির করা হোক।কারণ ওর আব্বুর ইচ্ছা, ছেলে যেনো তাঁর জানাজার নামাজ পড়ায়।"
একইসাথে তিনি বলেছেন, প্রাণভিক্ষা চাওয়া না চাওয়া ক্ষেত্রে ছেলেকে পাওয়া না পাওয়ার বিষয়কে শর্ত হিসিবে তারা রাখছেন।
কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, "ছেলে গায়েব হয়েছে নাকি নিখোঁজ হয়েছে,সেটাতো আমাদের ব্যাপার না।আমরা তার সিদ্দান্তের জন্য আপেক্ষা করবো।প্রাণভিক্ষা না চাইলে ফাঁসি কার্যকর করার যে ব্যবস্থা তা আমরা নেবো।"
এদিকে, মীর কাসেম আলী এখন গাজীপুরে কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন।
সেখানে নাকি কেরানীগঞ্জে নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকর করা হবে, সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ এখনও পরিস্কার করে কিছু বলছে না।
যদিও তারা বলছে, ফাঁসি কার্যকরের সব প্রস্তুতি রয়েছে।