বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকরের পর ভোর রাতে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে মীর কাসেম আলীর দাফন সম্পন্ন
- কাদির কল্লোল
- বিবিসি বাংলা, ঢাকা

রাত সাড়ে বারটায় মীর কাসেম আলীমর মৃতদেহ কারাগার থেকে বের করা হয়
বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকরের পর জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃতদেহ কড়া পুলিশী পাহাড়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে দাফন করা হয়েছে।
সেখানকার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বিবিসিকে জানিয়েছেন, ভোররাত পৌনে চারটার দিকে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে দাফন সম্পন্ন হয়।
সেখানে জানাজায় তার পরিবারের উপস্থিত সদস্যরা অংশ নেন।
এর আগে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরকরার পর গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে কড়া পুলিশী পাহাড়ায় তার মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মানিকগঞ্জে।
কাশিমপুর কারাগারে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করা হয় রাত সাড়ে দশটার দিকে।
এর প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলীয় ওয়েব সাইটের মাধ্যমে সোমবার দেশব্যাপী সকাল ছ'টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত অর্ধদিবস হরতাল ডেকেছে।
রাত সাড়ে বারটার দিকে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স বেরিয়ে আসে কাশিমপুর কারাগার থেকে।
মীর কাসেম আলীর মৃতদেহ নেয়া হচ্ছে মানিকগঞ্জের দিকে
এর একটিতে ছিল যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর মৃতদেহ।অ্যাম্বুলেন্সগুলোর সামনে পিছনে ছিল পুলিশ-র্যাবের গাড়ি।
গাড়ির বহরে দমকল বাহিনীরও একটি গাড়ি ছিল।
সেখান থেকে এই বহর রওয়ানা দেয় মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চালা গ্রামের উদ্দেশ্যে।
মীর কাসেম আলীর বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে হলেও তার পৈত্রিক বাড়ি মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে।
সেখানেই তার জন্ম।সেখানে তার মৃতদেহ নেয়ার সময় কাশিমপুর কারাগার থেকে পুরো রাস্তাতেই ছিল কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন আর রশিদ বলছিলেন,পথে যাতে কেউ কোনো সমস্যা তৈরি করতে না পারে, সেজন্য এই নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে।
জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করা হয় রাত সাড়ে দশটার দিকে।
ছবির উৎস, Getty Images
মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে কাশিমপুর কারাগারে
তার অনেক আগে রাত পৌনে দশটার দিকে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এবং সিভিল সার্জন ও কারা কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কারাগারের ভিতরে যান।
ফাঁসি কার্যকর করার জন্য যে কর্মকর্তাদের প্রয়োজন, তারা সকলে যখন ভিতরে গেছেন।
তখন কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে পুলিশী প্রতিবন্ধকতার বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের কাছে ফাঁসি কার্যকরের সময় নিয়ে নানান রকম খবর আসতে থাকে।
শেষ পর্যন্ত রাত পৌনে এগারটার দিকে জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক সাংবাদিকদের কাছে এসে ফাঁসি কার্যকর করার কথা জানান আনুষ্ঠানিকভাবে।
ছবির উৎস, AFP/RAJIB DHAR
ফাঁসি কার্যকরের আগে পরিবারের সদস্যরা দেখা করেন মীর কাসেম আলীর সাথে
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন কারীদের অনেকে কাশিমপুর কারাগারের সামনে জড়ো হয়েছিলেন।
তাদের সেখানে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে নানান রকম শ্লোগান দিতে দেখা যায়, যখন মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করার নিশ্চিত খবর সেখানে আসে।
ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর মীর কাসেম আলীর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।
তার পরিবারের একজন সদস্য জানিয়েছেন, আইন শৃংখলা রক্ষকারি বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাসায় অবস্থান নিয়েছিল এবং তাদের বাইরের কারও সাথে কথা বলতে দেয়নি।
তবে ফাঁসি কার্যকরের আগে কারাগারে শেষ দেখা করার পর মীর কাসেম আলীর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন বিবিসিকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন।