বাংলাদেশে বিয়ের অনুষ্ঠানে ‘ওয়েডিং প্ল্যানার’ জনপ্রিয় হচ্ছে

  • ফারহানা পারভীন
  • বিবিসি বাংলা, ঢাকা
গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের স্টেজ
ছবির ক্যাপশান,

গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের স্টেজ

কনে রাইসা ইসলাম ব্যস্ত রয়েছেন শেষ মুহূর্তের সাজগোজ নিয়ে। সাথে কিছু বন্ধু বান্ধব আর আত্মীয় পরিজন। চটুল হিন্দি গানের শব্দে কারো কথায় ঠিক কানে যাচ্ছে না। এই ফাকে আমি একটি ঘুরে দেখা শুরু করলাম উত্তরার একটি কমিউনিটি সেন্টারে রাইসার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের আয়োজন।

অতিথিদের বসার স্থান
ছবির ক্যাপশান,

অতিথিদের বসার স্থান

সব কিছু পরিপাটি করে সাজানো। সময়ের কিছু আগেই তৈরি হয়ে গেছে, ফুল দিয়ে সাজানো বর-কনে বসার স্টেজ ও অতিথিদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা। রাইসা ইসলামের বোন নুজহাত ইসলাম বলছিলেন তাদের পরিবারের প্রায় সবাই ব্যবসা ও চাকরির কাজে ব্যস্ত থাকেন। তাই বোনের বিয়ের কাজ কোন ত্রুটি ছাড়া করতে চেয়েছিলেন তিনি। নুজহাত বলছিলেন "এতে করে পরিবারের কারো উপরে চাপ পরেনি আবার আয়োজন হচ্ছে সুষ্ঠু ভাবে"।

বিয়ের অনুষ্ঠানের দুই তিন দিনের সব আয়োজন করছে এই ওয়েডিং প্ল্যানাররা। বছর দশেক আগে বাংলাদেশে এই প্ল্যানাররা কাজ শুরু করেন। কিন্তু এখন তাদের কাজের পরিধি বেড়েছে অনেক।

চলছে হলুদের অনুষ্ঠানের নাচ-গান
ছবির ক্যাপশান,

চলছে হলুদের অনুষ্ঠানের নাচ-গান

এরই মধ্যে বিয়ের কনে রাইসা ইসলামের সাজ শেষ। একফাকে তার সাথে কথা প্রসঙ্গে জানতে পারলাম ওয়েডিং প্ল্যানারদের দিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করার ইচ্ছা তার বেশি ছিল।

এর মধ্যে শুরু হল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। হলুদে ওয়েডিং প্ল্যানাররা বর-কনের পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের অংশগ্রহণে আয়োজন করেছে এই অনুষ্ঠানে। জানা গেল এর মহড়া হয়েছে গত দুইমাস ধরে।

কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে সাজানো হয়েছে
ছবির ক্যাপশান,

কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে সাজানো হয়েছে

বাংলাদেশে এই ধরণের ওয়েডিং প্ল্যানার ফার্ম রয়েছে অন্তত ২০ টি। যারা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কাজটি করছে। এছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে করছেন অনেকে। প্রথম সারির ওয়েডিং প্ল্যানারদের মধ্যে রয়েছে বিডি ওয়েডিং প্ল্যানার। প্রতিষ্ঠানটি কর্ণধার মাইনুর হোসেন বলছিলেন মানুষ মূলত দৈনন্দিন ব্যস্ততার কারণে ওয়েডিং প্ল্যানারদের দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। একই সাথে ব্যবসা হিসেবে এটা বেশ লাভজনক বলে তিনি তার দশ বছরের অভিজ্ঞতায় মনে করছেন।

বিডি ওয়েডিং প্ল্যানার প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার মাইনুর হোসেন
ছবির ক্যাপশান,

বিডি ওয়েডিং প্ল্যানার প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার মাইনুর হোসেন

আয়োজন ভেদে পুরো অনুষ্ঠানের বাজেট নির্ভর করে। তবে মি. হোসেন বলছিলেন "একদিনের অনুষ্ঠানের জন্য সর্বনিম্ন দেড় লক্ষ টাকা থেকে ৬০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানগুলো। কোন কোন অনুষ্ঠান বাজেট ছাড়িয়ে যায় কোটি টাকা"।

এদিকে হলুদের জন্য বর পক্ষ চলে এসেছে। আর পরিকল্পনা মাফিক কনে পক্ষ দাড়িয়ে গেছে তাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য। রাইসা ইসলামের পরিবারের মেনে স্বস্তির নিশ্বাস, কারণ টাকা একটু বেশি খরচ হলেও একদিকে চাপমুক্ত হয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান যেমন তারা আনন্দ উপভোগ করছেন তেমনি আয়োজনো ততক্ষণ পর্যন্ত চলছে পরিকল্পনা-মাফিক।