স্কুটিতে আগ্রহ বাড়ছে ঢাকার গৃহিণী, ছাত্রী, পেশাজীবী তরুণীদের
- আহ্রার হোসেন
- বিবিসি বাংলা, ঢাকা

শাহীনুর নার্গিস দেড় দশক ধরে ঢাকার রাস্তায় মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন।
এই শতকের গোড়ার দিকে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়েছেন বা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গেছেন, তারা হয়ত দেখে থাকবেন, ছেলেদের মত ছোট করে ছাটা চুলের এক তরুণী, শার্ট-প্যান্ট পড়া, মোটরসাইকেল চালিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
অতি পরিচিত এই তরুণীটি ছাত্র রাজনীতিতেও ছিলেন সামনের সারীতে।
আজ দেড় দশক পর এসেও সেই শাহীনুর নার্গিস ঢাকার রাস্তায় মোটরসাইকেল দাবড়ে বেড়ান।
"আমি যখন ঢাকার রাস্তায় বাইক চালাতাম তখন মনে হয় আর কোন মেয়ে বাইক চালাতো না। এখন অনেক মেয়ে স্কুটি চালায়। খুব স্বাচ্ছন্দ্যে সাবলীলভাবে চালায়"।
পল্লবীর গৃহবধূ রুনা চৌধুরী। তার লাল রঙের একটি স্কুটি বা ছোট আকারের দুই চাকার স্কুটার আছে। এটিতে করে তিনি দ্বিতীয় শ্রেণী পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে রোজ স্কুলে যান। বাজার করতে যান। এমনকি ডাক্তার দেখাতেও যান।
যখন স্বামী থাকেন তখন কি করেন?
"ওরও একটা বাইক আছে। তখন আমি আর আমার ছেলে ওর বাইকে চড়ি", বলছিলেন মিসেস চৌধুরী।।
পল্লবীর গৃহবধূ রুনা চৌধুরী। তার লাল রঙের একটি স্কুটি বা ছোট আকারের দুই চাকার স্কুটার আছে। এটিতে করে তিনি দ্বিতীয় শ্রেণী পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে রোজ স্কুলে যান।
প্রতিবেশী ভারতের বিভিন্ন শহরের রাস্তায় এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রচুর তরুণীকে মোটরসাইকেল বা স্কুটার নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেলেও বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে এটি তেমন নিয়মিত কোন দৃশ্য নয়।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রুনা চৌধুরী বা শাহীনুর নার্গিসের মতো তরুণীদের স্কুটি নিয়ে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
এক হিসেবে জানা যাচ্ছে, ঢাকায় এমন মহিলা বাইক চালকের সংখ্যা শতাধিক হবে।
এমনকি এই স্কুটি চালকেরা নানারকম ক্লাবও গড়ে তুলছেন।
এগুলোরই একটি বাংলাদেশ ওম্যান রাইডার্স ক্লাব।
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মিলিত হয়েছেন বাংলাদেশ ওম্যান রাইডার্স ক্লাবের দুই সদস্যা।
ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইশরাত খান মজলিশ বলছেন, "সমাজের দিক থেকেও এখন মানসিকতা অনেক পাল্টে যাচ্ছে। আমাদের ক্লাবে অনেক সদস্যরা আছে যাদের স্বামী তাদেরকে স্কুটি কিনে দিয়েছেন, রাস্তাঘাটে যানজট এবং যানবাহন পাওয়ার দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে"।
মেয়েদের মধ্যে যে স্কুটি বা মোটরবাইক চালানোর প্রবণতা বাড়ছে, তার নজির দেখতে পাচ্ছেন, ঢাকায় মোটরবাইকের একটি বড়সড় বিক্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক জাকারিয়া খান।
তিনি বলছেন, তাদের কাছে গ্রাহকদের এবং অনুসন্ধানকারীদের তথ্য সংগৃহীত থাকে।
"অনেক সময় মেয়েরা দল বেঁধে স্কুটির খবর নিতে, দাম যাচাই করতে আসছে। স্বামীরা স্ত্রীকে নিয়ে আসছে স্কুটি কিনে দিতে", বলছিলেন মি. খান।
ঢাকার একটি বিক্রয়কেন্দ্রে সাজিয়ে রাখা স্কুটি।
এরই মধ্যে ঢাকার রাস্তায় নেমে গেছেন বাইশ জন নারী ট্রাফিক সার্জেন্ট।
তারা লাল রঙের স্কুটি চালিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, দায়িত্ব পালন করছেন, যেমনটি এতদিন মোটরসাইকেল চালিয়ে করে আসছিলেন তাদের পুরুষ সহকর্মীরা।
প্রধান খবর
চিঠিপত্র ও মতামত
এডিটার'স মেইলবক্স: বাক স্বাধীনতা, জিয়ার খেতাব আর ভ্যাক্সিন নিয়ে প্রশ্ন
লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার রায় হবার পর, অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে, এই রায়ের মাধ্যমে কি বাংলাদেশে মুক্তচিন্তা এবং বাক স্বাধীনতার ক্ষেত্র শক্তিশালী হবে?