চীনা প্রেসিডেন্টের সফরে কী পেল বাংলাদেশ

ছয়টি প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ছবির উৎস, PID, BANGLADESH

ছবির ক্যাপশান,

ছয়টি প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে দুদেশের সম্পর্ক নিয়ে যেরকম উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে, তা অভূতপূর্ব।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় আনুষ্ঠানিক বৈঠক শেষে জানিয়েছেন, দুদেশের সম্পর্ক এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।

চীনা প্রেসিডেন্টের কথায়, বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক এক নতুন ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনায়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বন্ধু হিসেবে পাশে থাকতে চীন প্রস্তুত। তিনি বলেন, ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্কের পর্যায় থেকে দুদেশের সম্পর্ক এখন কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত হবে।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, দুদেশের মধ্যে ২৬টি নানা ধরণের চুক্তি এবং সমঝোতা হয়েছে।

বলা হচ্ছে চীনা প্রেসিডেন্ট যেরকম বিপুল বিনিয়োগ নিয়ে এসেছেন এই সফরের সময় সেটা একটা রেকর্ড।

দুদেশের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী চীন বাংলাদেশকে ২৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের ঋণ দেবে বিভিন্ন খাতে। এর বেশিরভাগই অবকাঠামো খাতে।

চীন আসলে বাংলাদেশের কোন কোন খাতে কী পরিমাণ বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে? এর মধ্যে কয়টি প্রকল্প আসলে এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়েছে?

গতকাল বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেই শেখ হাসিনা এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আনুষ্ঠানিকভাবে ছয়টি প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন।

আনুষ্ঠানিক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ছবির উৎস, PID, BANGLADESH

ছবির ক্যাপশান,

আনুষ্ঠানিক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম এবং খুলনায় দুটি বড় তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, যার একেকটির ক্ষমতাই হবে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট।

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে একটি টানেল তৈরির প্রকল্পেও অর্থ সহায়তা দিচ্ছে চীন। এছাড়া একটি সার কারখানা, ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'কনফুসিয়াস ইনষ্টিটিউট' নামে একটি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপিত হচ্ছে চীনা অর্থ সাহায্যে।

চীন বাংলাদেশের উপকুলে গভীর সমূদ্রে একটি বন্দর নির্মাণেও আগ্রহী ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের প্রতিবেশি ভারতের এ নিয়ে আপত্তি আছে। যার ফলে এই প্রকল্পটি নিয়ে কথা-বার্তা আর এগোয়নি বলেই মনে করা হয়।

চীনা প্রধানমন্ত্রীর সাথে ঢাকায় এসেছেন চীনা ব্যবসায়ীদের একটি বড় প্রতিনিধি দলও। বাংলাদেশ বিনিয়োগে তারা কতটা উৎসাহী?

বাংলাদেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষস্থানীয় সংগঠন এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট মতলুব আহমেদ বলছেন, চীনের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের ১৩টা চুক্তি হয়েছে। এই ১৩টি চুক্তিতে প্রায় এক হাজার তিনশো ষাট কোটি ডলার ব্যবসা এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনা আছে।

তিনি বলেন, এর মধ্যে সৌর বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে অবকাঠামো, রেলওয়ে সহ নানা খাতের বিনিয়োগ ও ব্যবসা রয়েছে।

মতলুব আহমেদ জানান, এর প্রতিদানে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা চীনের কাছে কোটা ফ্রি এবং ডিউটি ফ্রি পণ্য রফতানির সুযোগ চেয়েছেন।