‘প্রজন্ম ৭১’-এর রজত জয়ন্তী: লক্ষ্য কতটা অর্জিত হয়েছে?
- ফারহানা পারভীন
- বিবিসি বাংলা, ঢাকা

রজত জয়ন্তী উপলক্ষ্যে রায়ের বাজারে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি সৌধ প্রাঙ্গণে মিলিত হয়েছিলেন প্রজন্ম ৭১-এর সদস্যরা।
ঢাকার রায়ের বাজারের বুদ্ধিজীবী স্মৃতি সৌধে তখন মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের সন্তান ও পরিবারের সদস্যরা জড়ো হয়েছেন তাদের সংগঠন প্রজন্ম ৭১-এর ২৫ বছর পূর্তি উৎযাপনে।
মুক্তিযুদ্ধে নিহত ইঞ্জিনিয়ার ফজলুর রহমানের ছেলে সাইদুর রহমান।
বলছিলেন প্রজন্ম ৭১-এর শুরুতে তিনটি লক্ষ্য স্থির করে পথ চলা শুরু করেছিলেন তারা।
মি. রহমান বলছিলেন, "এই রাষ্ট্রের জন্মের জন্য আমরা যাদের কাছে ঋণী সেই শহীদ পরিবার অনেক অবহেলিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনা, যুদ্ধাপরাধের দাবি জোরদার করা, এবং শহীদ পরিবারকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভাবে প্রতিষ্ঠা করা" ছিল প্রথম দিকের উদ্দেশ্য।
১৯৯১ সালের ২৯শে অক্টোবর ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের করে আত্মপ্রকাশ ঘটে সংগঠনটির।
তবে তাদের সেই পথ ছিল মোটেই সহজ ছিল না।
শহীদ শামসুল করিম খানের মেয়ে ফাহমিদা খানম
যুদ্ধে নিহত শামসুল করিম খানের মেয়ে ফাহমিদা খানম বলছিলেন, "বিশ, বাইশ, একুশ, উনিশ এমন বয়স ছিল আমাদের। অনেক বয়োজেষ্ঠ্যরা সাহায্য করেছেন। এই সংগঠনকে দাড় করানোর জন্য অনেক ত্যাগ, কথা, মিটিং, অনেক কথা ছিল"।
১৯৯২ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণ আদালতের সাথে যুক্ত হয় প্রজন্ম একাত্তর।
মুক্তিযুদ্ধে নিহত ডা, আব্দুল আলীম চৌধুরির মেয়ে নুজহাত চৌধুরি বলছিলেন সেদিনকার প্রেক্ষাপটে এখন বাংলাদেশে যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে - সেটা ছিল তাদের কল্পনার বাইরে।
নুজহাত চৌধুরি বলছিলেন " ৯১ এ যখন গণতান্ত্রিক আন্দোলন হল তখন আমরা আশা করেছিলাম আমরা আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ দেখবো। কিন্তু ডিসেম্বরেই আমরা দেখেছি জামায়াত সরকারের অংশ হয়েছে"।
শহীদ ডা. আব্দুল আলীম চৌধুরির মেয়ে নুজহাত চৌধুরি
তিনি বলছিলেন, "ভেবেছিলাম আন্দোলন করে রক্ত দিয়ে আমাদের জীবনই যাবে, সত্যি সত্যি যে কোন দিন রাজাকারের বিচার হবে, আবার বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসি হবে সেটা আমি সত্যিই চিন্তা করতে পারিনি"।
বিভিন্ন আন্দোলনে পথে থেকেছেন এর সদস্যরা।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রাখার মূল উদ্দেশ্যে নিয়ে শুরু হলেও পরিবর্তীতে যোগ হয়েছে আরো লক্ষ্য।
কিন্তু ২৫ পর এই সংগঠনের লক্ষ্যের কতটা অর্জন হয়েছে?
বুদ্ধিজীবী মুনির চৌধুরির ছেলে আসিফ মুনির বলছিলেন, অর্জন নিয়ে দুই ধরণের অনুভূতি তাদের তৈরি হয়েছে।
"এক ধরণের আত্মতুষ্টি আছে, কিছু কিছু পেয়েছি। কিন্তু সিম্বলিক্যালি বলছি ত্রিশ লক্ষ শহীদের পরিবারের সন্তান আমাদের সদস্য কিন্তু সাংগঠনিক ভাবে আমরা যোগাযোগ রাখতে পারিনি"।
"যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যে দাবি সেখানে কিছুটা অর্জিত হয়েছে, মনে হচ্ছে একটা ট্রেন্ড সেট হয়েছে। আর সবচেয়ে বড় অর্জন যেটা প্রজন্ম চত্বর হয়েছে, গণজাগরণ মঞ্চ হয়েছে, তখন মনে হয়েছে বয়সে আমাদের চেয়ে যারা তরুণ তারা এগিয়ে আসছে। এটা আমাদের বড় প্রাপ্তির জায়গা মনে হয়েছে" বলছিলেন আসিফ মুনির।
প্রধান খবর
চিঠিপত্র ও মতামত
এডিটার'স মেইলবক্স: আল জাজিরা নিয়ে 'একপেশে' আর চীন-ভারত নিয়ে দ্বিচারিতা?
বাংলাদেশে আল জাজিরার প্রতিবেদন নিয়ে আলাপ-আলোচনার মনে হচ্ছে কোন শেষ নাই।