ব্যবসায়িক সম্পর্ক হারালো দেড়শো পোশাক কারখানা

  • রাকিব হাসনাত
  • বিবিসি বাংলা, ঢাকা
পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিক
ছবির ক্যাপশান,

পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিক

বাংলাদেশে কারখানা নিরাপত্তা মানদণ্ড অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় গত এক মাসেই ১৩টি কারখানার সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থগিত করেছে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স।

জোট দুটির ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী এ নিয়ে অ্যালায়েন্স এ পর্যন্ত মোট ১০৪টি আর অ্যাকর্ড ৪৭টি কারখানার বিষয়ে নিরাপত্তা বা কারখানা সংস্কার ইস্যুতে এমন সিদ্ধান্ত নিলো।

এমনকি এসব কারখানাকে কেউ সাব কন্ট্রাক্ট দিলে, তাদের সাথেও ব্যবসা করবে না এ দু'জোটের সাথে থাকা ইউরোপ আমেরিকার ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো।

তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহ-সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলছেন কোনও ক্ষেত্রে ভবন নিয়ে সমস্যার কারণে আবার কোনও ক্ষেত্রে কারখানা মালিকদের অনীহার জন্যই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

বিজিএমইএ ও সরকারের কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর হিসেবে অনুযায়ী প্রায় তিন হাজার কারখানা পরিদর্শন হয়েছে গত দুই বছরে। এর মাধ্যমে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ তেত্রিশটি কে বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি বহু কারখানাকে পর্যায়ক্রমে প্রয়োজনীয় সংস্কারের গাইডলাইন দেয়া হয়েছিলো।

অনেকেই সেটি বাস্তবায়ন করে কারখানা নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে আবার অনেকেই তা পারেনি। কিন্তু এর কারণ কি ? কেন নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করতে তারা ব্যর্থ হচ্ছে মূলত মধ্যম সারির এ কারখানাগুলো ?

এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ আহমদ বলেন মূলত আর্থিক কারণে এটা হচ্ছে।

"অনেক কারখানা ভাড়া করা আবার অনেক ক্ষেত্রে ভবন মালিকরা উৎসাহী নন বলে এমন সমস্যা হচ্ছে। তবে যেসব কারখানার সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে সেগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে আমরাও কাজ করে যাচ্ছি"।

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

পোশাক কারখানায় বিভিন্ন দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে কারখানার নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনায় আসে।

কিন্তু সংস্কারে ব্যর্থ হওয়া কারখানাগুলোর সাথে বড় ব্রান্ডের ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাতিল হলে তাতে করে দেশের মধ্যম পর্যায়ের এসব কারখানার শ্রমিকরা কিছুটা ঝুঁকি বা অনিশ্চয়তায় পড়বেন বলে মনে করেন শ্রমিক নেতা ওয়াজেদুল ইসলাম, যিনি শ্রমিক নিরাপত্তা ইস্যুতে অ্যালায়েন্সের সাথে কাজ করেছেন।

আবার অ্যাকর্ড তালিকা থেকে বাদ পড়া একটি কারখানা অল ওয়েদার লিমিটেডের মালিক তারিকুল ইসলাম বলছেন বিলম্বে হলেও তিনি তার কারখানা নিজস্ব ভবনে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মিস্টার ইসলামের আশা নিজস্ব ভবনে যাওয়ার পর তিনি পশ্চিমা ক্রেতাদের সাথে ব্যবসার সুযোগ পাবেন ও তার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

তবে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর অ্যাকর্ড ভুক্ত ক্রেতাদের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক পুনুরুদ্ধারে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা না থাকলেও অ্যালায়েন্স বলছে দুবছরের মধ্যে যথাযথ সংস্কারকাজ শেষ করতে পারলে তাদের জোটে থাকা কোম্পানিগুলোর সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্কে ফিরে আসার সুযোগ রয়েছে।

এখন দেখা যাক যেসব কোম্পানিকে সম্পর্ক ছিন্ন করার তালিকায় নেয়া হয়েছে তারা সেই সুযোগ নিতে পারে কি-না।