কর্মস্থলে বৈষম্যের শিকার ক্যান্সার আক্রান্তদের অনেকেই

ক্যান্সার আক্রান্ত টেরি ফস্টার, ক্যান্সারের রোগী হবার কারণে তাঁকে চাকরি হারাতে হয়।
দাতব্য সংস্থা ম্যাকমিলান ক্যান্সার সাপোর্টের এক গবেষণায় দেখা গেছে ক্যান্সারে আক্রান্তদের প্রায় পাঁচ শতাংশ মানুষ (বা ১৮ শতাংশ) চিকিৎসা নিয়ে কর্মস্থলে ফিরলেও তারা তাদের সহকর্মী বা বসের বৈষম্যের শিকার হন।
এক হাজার নয় জন রোগীর ওপর এই জরিপটি চালায় সংস্থাটি। এরা সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে কর্মস্থলে ফিরেছিলেন। এই জরিপ এটাও প্রমাণ করে যে ক্যান্সার আক্রান্তরা পুরোপুরি সুস্থ হবার আগেই কাজে ফিরেছেন।
অনেকে বলছেন যে চিকিৎসার কারণে বারবার অফিস থেকে ছুটি নিতে হয় বলে তারা অপরাধবোধে ভুগেন।
ম্যাকমিলানের কর্মকর্তা লিজ এগান বলছেন "রোগীদের বক্তব্যে এটাই প্রমাণ করে যে বেশিরভাগ অফিস তার কর্মকর্তাদের এক্ষেত্রে সঠিকভাবে পাশে দাঁড়াচ্ছেন না"।
সংস্থাটি বলছে যুক্তরাজ্যের যেসব নাগরিক ক্যান্সারে ভুগেন তারা তাদের কর্মস্থল থেকে ভালো সহায়তা পাবার অধিকার রাখেন, এমনকি ওই রোগীদের জন্য বিশেষ কর্মকর্তাও নিয়োগ দেয়া উচিত প্রতিষ্ঠানগুলোর। কিন্তু দু:খের বিষয় খুব কম সংখ্যক প্রতিষ্ঠানই সত্যিকার সাহায্যের মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসছে।
সংস্থাটির জরিপে দেখা যাচ্ছে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের ১৪ শতাংশ চাকরি ছেড়ে দিচ্ছে বা তাদের চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।

ছবির উৎস, Science Photo Library
ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ
৫৮ বছর বয়সী টেরি ফস্টার বলেছেন ক্যান্সারের রোগী হওয়ার কারণে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
২০১০ সালে তার শরীরে এই রোগটির উপস্থিতি ধরা পড়ে এবং তাকে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছিল ১৯ দিন।
এক সময় ধারণা করা হয়েছিল মি: ফস্টার হয়তো আর বাঁচবেন না।
কিন্তু তিনি আশ্চর্যভাবে বেঁচে যান এবং তাঁর ছোট্ট শিশুটিকে দেখে নতুনভাবে বাঁচার তাগিদ অনুভব করেন।
টেরি ফস্টার এটাও আশা করছিলেন যে খুব শিগগিরই তিনি কাজে ফিরতে পারবেন। কিন্তু যখন তিনি তার ম্যানেজারের সাথে দেখা করতে যান তার ম্যানেজার খুব রূঢ়ভাবে তাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়।
তবে মি: ফস্টার সেই প্রতিষ্ঠানকে অন্যায্যভাবে তাকে বরখাস্ত করার জন্য আদালতের কাঠগড়ায় দাড় করান এবং ৬২ হাজার পাউন্ডেরও বেশি অর্থ জিতে নেন।
ম্যাকমিলান ক্যান্সার সাপোর্টের মিস এগান বলছেন ক্যান্সার আক্রান্ত অনেকেই জানেন না যে 'ইকুয়েরিটি অ্যাক্ট ২০১০' অনুযায়ী তাদেরও অধিকার আছে।
যেহেতু কর্মস্থলে অনেকেই বৈষম্যের শিকার হন এবং চাকরি হারানোর ভয়ও থাকে তাই অনেক সময়ও এমনও দেখা যায় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েও সেটা সহকর্মী বা প্রতিষ্ঠান কাউকেই জানান না অনেক রোগী।