মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর দায়ে শাস্তি বিচারকের

  • অমিতাভ ভট্টশালী
  • বিবিসি বাংলা, কলকাতা
আদালতের কার্যক্রম

ছবির উৎস, Joe Raedle

ছবির ক্যাপশান,

মোতোম দেববর্মা নামের ওই বিচারক এখন উত্তর ত্রিপুরা জেলার কাঞ্চনপুরের মহকুমা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও সিভিল জজ।

মদ খেয়ে গাড়ি চালানো এবং নিয়ম ভাঙার দোষে উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্য ত্রিপুরার এক বিচারককে শাস্তি দিয়েছে সেখানকার হাইকোর্ট।

আদালতের 'ফুল-কোর্ট' জানিয়েছে ওই বিচারক একদিকে যেমন মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালিয়েছিলেন, তেমনই সেই ঘটনার জন্য যে তাকে পুলিশ হাজতে থাকতে হয়েছিল - এ সবই তিনি উচ্চতর বিচারকের কাছে গোপন করে গিয়েছিলেন।

আর হাইকোর্টের তদন্তের সময়ে হলফনামা দিয়ে অসত্য কথা বলেছেন ওই বিচারক এমন কথাও আদালত জানানো হয়েছে। এই সব অভিযোগের দায়ে তাঁর পরবর্তী দুটো ইনক্রিমেন্ট বা বেতন-বৃদ্ধি আটকে দেওয়া হয়েছে।

আদালতের নথিতে ঐ বিচারককে মোতোম দেববর্মা নামে চিহ্নিত করা হয়েছে, যিনি এখন উত্তর ত্রিপুরা জেলার কাঞ্চনপুরের মহকুমা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও সিভিল জজ।

২০১৪ সালের ওই ঘটনা তদন্ত করে 'ফুল-কোর্ট' নির্দেশিকা জারি করেছে কয়েকদিন আগে।

ঘটনার সময়ে বিশালগড়ের সিভিল জজ ছিলেন তিনি। অনুমতি ছাড়াই তিনি কাজের জায়গা ছেড়ে চলে এসেছিলেন রাজধানী আগরতলায়, যেটা নিয়মবিরুদ্ধ।

আদালতের নথিতে বলা হয়েছে, মাঝরাতে আগরতলার জি পি পন্থ হাসপাতালের চারদিকে মদ্যপ অবস্থায় বেসামাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর সময়ে স্থানীয় মানুষ তাঁর গাড়িটি ঘিরে ধরেন এবং পরে পুলিশ এসে থানায় নিয়ে যায়। ওইসময় মি: দেববর্মা পুরো নিয়ন্ত্রণহীন আচরণ করছিলেন এবং জনসম্মুখে অশালীন ভাষা ও খারাপ ব্যবহারও করছিলেন বলে আদালতের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে।

সেই রাতে গ্রেপ্তার হয়ে থানা হাজতেই থাকতে হয়েছিল মি. দেব বর্মাকে।

হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সত্য গোপাল চট্টোপাধ্যায় যে নির্দেশিকা জারি করেছেন তাতে লেখা হয়েছে যে, "থানা থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে বিষয়টা তিনি মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা সেশানস্‌ জজ অথবা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কাউকেই জানাননি।

উপরন্তু হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে যে মামলা দায়ের করেছিল এই ব্যাপারে, সেখানে তিনি মিথ্যা হলফনামা দায়ের করেছিলেন।"

পরে যদিও লিখিতভাবে ওই ত্রুটিগুলোর জন্য তিনি হাইকোর্টের কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করেন, তবে 'ফুলকোর্ট' সিদ্ধান্ত নেয় যে মি. দেববর্মা একদিকে যেমন নিয়ম ভেঙেছেন, তেমনই তাঁর আচরণ মোটেই একজন বিচারবিভাগীয় অফিসারের মতো ছিল না।

শাস্তি হিসাবে তাঁর পরবর্তী দুটো বেতন-বৃদ্ধি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় আদালতের 'ফুল-কোর্ট'।

এর আগেও ত্রিপুরার এক বিচারককে বেসামাল অবস্থায় খালি গায়ে, হাফপ্যান্ট পড়ে আদালত চত্ত্বরে তান্ডব চালানোর দায়ে শাস্তি দিয়েছিল হাইকোর্ট।