বাংলাদেশে ভ্যালেন্টাইনস ডে বিতর্ক

ভ্যালেন্টাইনস ডে

ছবির উৎস, FOCUA BANGLA

ছবির ক্যাপশান,

অনেকে বেশ আয়োজন করে ভ্যালেন্টাইনস ডে উদযাপন করেছেন

ক্যাম্পাসে আড্ডা, রিক্সায় ঘুরে বেড়ানো কিংবা রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া করে 'ভ্যালেন্টাইনস ডে' উদযাপন করেছেন অনেকে। এ দিনটি উদযাপনের অগ্রভাগে ছিলেন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক আগে থেকেই ১৪ ই ফেব্রুয়ারিতে পালন করা হয় 'সেন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে'। বাংলাদেশে অন্তত ১৫ বছর ধরে এই দিবসটি তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে, দেশটিতে এটিকে 'ভালোবাসা দিবস' হিসেবে অনেকেই পালন করছে।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের সমাজে ভিন্ন সংস্কৃতির এই দিবসটি উদযাপনের ক্ষেত্রে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে?

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নিশাত রায়হান এ দিনটিকে উৎসবের দিন হিসেবে মনে করেন।

"একটা দিনকে কেন্দ্র করে আমরা যদি একটু ঘুরি-ফিরি, একটু মজা করি বা আনন্দে কাটাই তাহলে আমার মনে হয়না এটা খারাপ কিছু," বলছিলেন নিশাত রায়হান

তবে ভ্যালেন্টাইন্স ডে কেন্দ্রিক বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না । বাংলাদেশের সমাজে অনেকেই মনে করেন এ দিনটি উদযাপন করা সংস্কৃতি এবং ইসলাম ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য নয়। আবার অনেকে দেখছেন এটিকে পশ্চিমা সংস্কৃতির অংশ হিসেবে।

ঢাকার একটি মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মো: শাহজালাল খান মনে করেন বাংলাদেশে ভ্যালেন্টাইনস ডে উদযাপন বন্ধ হওয়া উচিত। যুক্তি হিসেবে তিনি বলছেন, এ ধরনের দিবস পালন ইসলাম মোটেও সমর্থন করেনা।

মি: খান বলেন, " এ দিনকে কেন্দ্র করে অনেকে যেভাবে ইসলামকে সম্পূর্ণ অবমাননা করছে, আমাদের এখানেই সবচেয়ে আপত্তি।"

ছবির উৎস, BBC

ছবির ক্যাপশান,

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মনিরা বেগম।

একপক্ষ মনে করছে এ দিনটি আরো ব্যাপক পরিসরে উদযাপন করা উচিত। আবার অন্য পক্ষ মনে করে এটি বন্ধ করা উচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মনিরা বেগম মনে করেন, এ দিবসকে কেন্দ্র করে মতপার্থক্য যতটা কমিয়ে আনা যায় ততই ভালো।

" এই যে একপক্ষ বলছে করাই যাবেনা আবার অন্যপক্ষ বলছে আমরা করবো এতে করে এক ধরনের ক্ল্যাশ (সংঘাত) তৈরি হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে বের হয়ে যেটা আমাদের সংস্কৃতির সাথে যায় সেটাই করা উচিত," বলছিলেন মনিরা বেগম।

যারা এ দিবসটি উদযাপন করেন তাদের বেশিরভাগই বিবেচনা করেন না এটি কোন সংস্কৃতি থেকে এসেছে। তাদের কাছে উদযাপনটাই মুখ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মনিরা বেগমের মতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ দিবসটিকে কেন্দ্র করে এক ধরনের বাণিজ্যিক চিন্তা জোরালো হয়েছে।

বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন বাড়ানোর জন্য নানাভাবে এ দিনটিকে তুলে ধরছে। ফলে দিনটিকে কেন্দ্র করে তরুণদের আগ্রহও বাড়ছে।

উদযাপনকারীরা বলছেন, সাংস্কৃতিক বিতর্ক যাই থাকুক না কেন, এ দিনকে কেন্দ্র করে যদি উৎসব করা যায় তাতে মন্দ কী?