অবশেষে সাঁওতালপল্লিতে আগুন লাগানো দুই সদস্যকে খুঁজে পেয়েছে পুলিশ

পুলিশ ঘর-বাড়িতে আগুন দিচ্ছে, তার ছবিও তোলা হচ্ছে
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চিনিকলের বিরোধপূর্ণ জমিতে সাঁওতালপল্লিতে আগুন লাগানোর ঘটনায় দুই সদস্যকে চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ।
তদন্তের পর পুলিশের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার দুইটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা গেলেও,আগুন লাগানোর অভিযোগ বরাবর নাকচ করে আসছিল পুলিশ। তবে হাইকোর্টের আদেশের পর অবশেষে দুই পুলিশ সদস্যকে তারা সনাক্ত করেছে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু বিবিসিকে জানান, আদালতে পুলিশের আইজির তরফ থেকে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। সেখানে দুইজন পুলিশ সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা সরাসরি আগুন দিয়েছে। তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া সেখানে অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আরো পড়তে পারেন:
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৫৮জন সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত দুই পুলিশের একজন গাইবান্ধার গোয়েন্দা শাখার সহ-পরিদর্শক ও অন্যজন পুলিশ লাইনসের কনস্টেবল।
ঘটনার পর আল-জাজিরা টেলিভিশনে যে প্রতিবেদন প্রচার হয়, সেখানে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মাথায় হেলমেট এবং বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পড়া পুলিশ সদস্য সাঁওতালদের বাঁশ এবং ছনের তৈরি ঘরের কাছে গিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে
দুই প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য ছাড়াও বাইরের আরো লোক জড়িত ছিল বলে তদন্তে জানা গেছে, কিন্তু তাদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়।
গত বছরের ৬ই নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জের রংপুর চিনিকলের বিরোধপূর্ণ জমি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদের সময় তাদের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। ওই ঘটনায় অন্তত কুড়ি জন আহত আর কয়েকজন সাঁওতাল নিহত হন।
ঘটনার পর আল-জাজিরা টেলিভিশনে যে প্রতিবেদন প্রচার হয়, সেখানে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সাঁওতালদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হচ্ছে। সাঁওতালদের বসতির পাশেই দাঁড়িয়ে অনেক পুলিশ গুলি করছে এবং কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ছে।
চিনিকলের বিরোধপূর্ণ জমি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদ করে দেয় পুলিশ
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে তাদেরই মধ্য থেকে মাথায় হেলমেট এবং বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পড়া একজন পুলিশ সদস্য সাঁওতালদের বাঁশ এবং ছনের তৈরি ঘরের কাছে গিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। মুহূর্তেই আগুন ধরে যায় এবং পাশের ছনের ঘরগুলোতে তা ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে সিভিল ড্রেসে কয়েকজনকে জনকে দেখা যাচ্ছে।
ভিডিওতে পুলিশের আগুন ধরানোর ঘটনা পরিষ্কার দেখা গেলেও তা বরাবর নাকচ করে আসছিল জেলার পুলিশ।
হাইকোর্টের আদেশে গাইবান্ধার পুলিশ সুপারসহ সেদিন চামবাড়ি এলাকায় দায়িত্বরত সব পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়।
এ ধরণের আরো খবর: