'শিরশ্ছেদ ভুল ছিল': আইএসের সেই গলাকাটা গ্রুপের দুজনের স্বীকারোক্তি

ছবির উৎস, Reuters
আলেক্সান্ডা কোতি( বাঁয়ে) এবং এল শফি এলশেখ
ইসলামিক স্টেট জঙ্গী গ্রুপের অন্যতম কুখ্যাত সেল - যার নাম ছিল 'বিটলস' এবং যারা বিশেষ করে ক্যামেরার সামনে বিদেশী জিম্মিদের শিরশ্ছেদ করতো - তার দু'জন কথিত সদস্য ধরা পড়ার পর স্বীকার করেছে যে 'বিদেশী জিম্মিদের হত্যা করাটা ভুল হয়েছিল।'
আলেক্সান্ডা কোতি এবং এল-শফি এলশেখ এবছর জানুয়ারি মাসে সিরিয়ায় ধরা পড়ে, এবং তারা এখন সিরিয়ায় কুর্দিদের একটি কারাগারে আছে।
তারা দু'জনেই পশ্চিম লন্ডনের বাসিন্দা ছিল। তাদের ব্রিটিশ টানের ইংরেজির জন্য ইসলামিক স্টেটের মধ্যে তাদের নাম দেয়া হয়েছিল বিটলস - ১৯৬০এর দশকের বিশ্ববিখ্যাত পপ গ্রুপের নামে।
বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন:
ছবির উৎস, UNKNOWN/HO VIA MET POLICE, KOTEY, HANDOUT
আইএসের বিটলস সেল - বাঁ থেকে এমওয়াজি, আইন ডেভিস, কোতি, এবং এলশেখ
এলশেখ এবং কোতি সম্প্রতি উত্তর সিরিয়া থেকে এসোসিয়েটেড প্রেসকে এক সাক্ষাৎকার দেয়। এতে সে বলেছে, যুক্তরাজ্য সরকার 'অবৈধভাবে' তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করেছে এবং তার ফলে তাকে আমেরিকার হাতে তুলে দিয়ে অন্য দেশের কারাগারে নিয়ে নির্যাতন করা হতে পারে - এমন ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
"আমাদেরকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হতে পারে, সেখানে যা খুশি তাই করা হতে পারে, কেউ আপনাকে রক্ষা করার নেই, কোন নাগরিকত্বও নেই। আমরা যদি একদিন হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যাই - তাহলে আমার মা কাকে গিয়ে বলবে যে 'আমার ছেলে কোথায়?'"
তার কথা "আমি কোন নায্য বিচার পাবো না, কারণ সবাই আমাকে বিটল বলে জানে।"
আইএসের হাতে শিরশ্ছেদের শিকার হয়েছেন যারা
আলেক্সান্ডা কোতি সাক্ষাতকারে বলেছে, তারা যে শিরশ্ছেদগুলো করেছে তাতে কোন লাভ হয় নি।
"এ হত্যাগুলো দু:খজনক ছিল, এর চাইতে বরং ওই বিদেশীদের বন্দী করে রাখলে অনেক লাভ হতো।"
এই দলে ছিল চার জন - মোহামেদ এমওয়াজি, আইন ডেভিস, আলেক্সান্ডা কোতি এবং এল-শফি এলশেখ্। এদের সবাই লন্ডন থেকে আসা।
মোহামেদ এমওয়াজি বা 'জিহাদি জন' মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফোলিকে ক্যামেরার সামনে ছোরা দিয়ে শিরশ্ছেদ করে পৃথিবীব্যাপি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। সে ২০১৬ সালে এক ড্রোন হামলায় নিহত হয়। আইন ডেভিস এখন তুরস্কের কারাগারে বন্দী।
ছবির উৎস, AFP
গুয়ানতানামোতে নিয়ে যাওয়া হতে পারে বন্দী বিটলসদের
মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, ইসলামিক স্টেটের এই বিটলস সেল ২৭ জনেরও বেশি বিদেশী জিম্মিকে শিরশ্ছেদ করেছে এবং আরো অনেককে নির্যাতন করেছে।
এলশেখ এবং কোতিকে যিনি ইন্টারভিউ করেছেন সেই সাংবাদিক সারাহ আল-দীব বলেছেন, লোক দুটি খুবই স্মার্ট এবং খুবই ধার্মিক।
বিবিসিকে তিনি বলেন, "তারা ইসলামিক স্টেটের সদস্য হবার জন্য জন্য যে কোনরকম গ্লানি বোধ করে এমন আমার মনে হয় নি।"