প্রীতিভাজনেষু: আপনাদের প্রশ্ন, সম্পাদকের জবাব

  • মাসুদ হাসান খান
  • বিবিসি বাংলা
বিটিভিতে প্রচারিত বিজ্ঞাপন

ছবির উৎস, বিটিভি

ছবির ক্যাপশান,

বিটিভিতে প্রচারিত বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে একটি প্রচারণামূলক বিজ্ঞাপন নিয়ে চলতি সপ্তাহে সারা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এতে দাবি করা হয়েছে যে বাংলাদেশে কোন ফকির নেই। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। এই বিজ্ঞাপনটি প্রচারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে আমরা বেশ কয়েকটি চিঠি পেয়েছি। সেখান থেকে দুটি চিঠি তুলে ধরছি।

প্রথমটি পাঠিয়েছেন মেনহাজুল ইসলাম তারেক, দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে: বিবিসি বাংলার ফেসবুক পেজে খবরটি দেখে চমকে উঠলাম। খবরটির শিরোনাম: 'আমি গরীব হতে পারি, কিন্তু মিসকিন নই।' আজকে যদি কোন ফকির এসে আমার কাছে ভিক্ষা চায় তাহলে তাকে কি আমি এই ভিডিওটি দেখাবো? দেশে কোন ফকির-মিসকিন নেই, আমার মতে, এই দাবি কাল্পনিক। সরকারের উদ্দেশ্যে আমি আরও বলতে চাই, ফকির-মিসকিন যদি নাই থাকে, তাহলে কোটি কোটি টাকার ভর্তুকি দিয়ে ১০ টাকা কেজিতে চাল বিতরণ করছেন কাদের মাঝে? বিষয়টা সাংঘর্ষিক হয়ে গেল না?

এ বিষয়ে পরের চিঠি পাঠিয়েছেন মো. নাজমুল হক, ঢাকা থেকে: বিটিভিতে প্রচারিত বিজ্ঞাপনটি সম্পর্কে রিপোর্টটি খুবই চমকপ্রদ হয়েছে, খুবই অর্থবহ হয়েছে। প্রকৃতই বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা, যা সাধারণ মনুষ্যমাত্রই জানেন। এমন মিথ্যা কথা বিটিভির মত গণমাধ্যমে কেমন করে প্রচার হল তা বোধগম্য নয়।

মেনহাজুল ইসলাম এবং নাজমুল হক, আপনাদের দুজনকেই ধন্যবাদ। আসলে এটি ছিল সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে একটি উন্নয়নমূলক বিজ্ঞাপন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন এটি প্রচার করে। এতে বলা হয়েছে যে এই প্রকল্পের মাধ্যমে এপর্যন্ত আড়াই লাখ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। আরও এক লাখ পরিবারের পুনর্বাসনের কার্যক্রম চলছে। বিজ্ঞাপনটি নিয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ছবির ক্যাপশান,

আর্কাইভ ফটো: মওলানা ভাসানীর সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন বিবিসি বাংলার সিরাজুর রহমান।

বিটিভির মহাপরিচালক এস এম হারুনুর রশিদ জানিয়েছেন, তার প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র বিজ্ঞাপনটি প্রচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তারা এর পরিকল্পনার সাথে জড়িত নন। অন্যদিকে যে বিষয়বস্তুকে এই বিজ্ঞাপনে তুলে ধরা হয়েছে তা বাস্তবতাকে সমর্থন করে কিনা এই নিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হলে তারা টেলিভিশনের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেয়।

ইন্টারনেটে বিবিসির খবর শোনার সমস্যা সম্পর্কে জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন অরুণ বিকাশ চাকমা: আমি বিবিসি বাংলার খবর নিয়মিত ইন্টারনেটে শুনি। কিন্তু কোন কারণে যখন ৩/৪দিন খবর শুনতে মিস করি তখন পুরনো খবরগুলো শুনতে বেশ সমস্যা তৈরি হয়, কেননা ঐ খবরের ভিডিওতে কোন তারিখের খবর সেটি উল্লেখ থাকেনা, শুধু বলা হয় আজকের প্রবাহ। বিবিসি বাংলার কাছে আমার অনুরোধ প্রতিদিনকার খবরের শুরুতে ঐদিনের তারিখটি যাতে বলে দেয়া হয়। যাতে যারা ইন্টারনেটে খবরগুলো পরে শুনবেন তারা সহজেই কোন তারিখের খবর শুনছেন সেটি জানতে পারেন।

মি. চাকমা। আপনার সমস্যাটি সম্পর্কে জানানোর জন্য ধন্যবাদ। আসলে বিবিসি বাংলার ইন্টারনেট পাতায় রেডিও অনুষ্ঠানের আর্কাইভ খুবই সীমিত। মাত্র তিন-চারদিনের অনুষ্ঠান সেখানে রাখা থাকে। আপনি এই চিঠি আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন ফেসবুকের মাধ্যমে। আপনি হয়তো জানেন ফেসবুকে ইদানীং আমরা প্রবাহ অনুষ্ঠানর লাইভ স্ট্রিমিং সম্প্রচার করছি। সেখানে কিন্তু আপনি প্রবাহ অনুষ্ঠানের এখনকার অধিবেশনগুলোর সবই দেখতে পাবেন। তাতে তারিখ দেয়া থাকে। ফলে বুঝতে পারবেন কোন দিন কোন অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হয়েছিল। আশা করি এতে আপনার সমস্যার সমাধান হবে।

মিয়ানমার সম্পর্কে এই চিঠি পাঠিয়েছেন এ কে সরকার, রাজশাহী থেকে: অনেকদিন পর আজ আবার লিখতে বসলাম ।মিয়ানমারের সহিংসতার ওপর জাতিসংঘ যে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে তাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছয় জন জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করার সুপারিশ করা হয়েছে সেখানে আরো বলা হয়েছে যে মিয়ানমারের তিনটি প্রদেশে জেনোসাইড চালানো হয়েছে। আমার প্রশ্ন হলো, এখানে Genocide শব্দ ব্যবহার হলো কেন? Holocaust শব্দ নয় কেন? কারণ Genocide শব্দের অর্থ হল গণহত্যা , আর Holocaust শব্দের অর্থ পুরো জাতিগত নিধন । জাতিসংঘ এর আগে বলেছে, আরাকানে যা ঘটেছে তা হল , "জাতিগত নিধন'' । পার্থক্যটা বুঝিয়ে বললে খুশি হবো।

ছবির ক্যাপশান,

বিবিসি বাংলার আকবর হোসেন রেডিও রিপোর্টের জন সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন।

আমার মনে হয় শব্দ দুটির অর্থ আপনি কিছুটা গুলিয়ে ফেলেছেন, মি. সরকার। হলকস্ট মানে হলো ব্যাপক সংখ্যক মানুষের হত্যা। আর জেনোসাইড শব্দের অর্থ একটি বিশেষ জাতিগোষ্ঠীর মানুষের ব্যাপক সংখ্যায় হত্যা। হলকস্ট শব্দটির নানা ধরনের ব্যঞ্জনা রয়েছে। যেমন নিউক্লিয়ার হলকস্ট। কিংবা জিউইস হলকস্ট, অর্থাৎ ইহুদি নিধন। সেই বিবেচনায় জাতিসংঘ সঠিকভাবেই একে জেনোসাইড বলছে, কারণ সেখানে শুধুমাত্র রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষজন নিধনের শিকার হয়েছে। আশা করি পার্থক্যটা বোঝাতে পেরেছে। ধন্যবাদ।

বিবিসি বাংলার ফেসবুক পাতার প্রোফাইল ছবি নিয়ে প্রশ্ন পাঠিয়েছেন উদয় রায়: বিবিসি বাংলার ফেসবুক পাতার প্রোফাইল ছবিটায় কেন বিবিসি নিউজ দেয়া হয়েছে? বিবিসি বাংলা কেন দেয়া হয়নি?

প্রোফাইল ছবিতে বিবিসি নিউজ দেয়া হয়েছে কারণ বিবিসি বাংলা, বিবিসি নিউজ-এর একটি অংশ। আপনি লক্ষ্য করবেন শুধু বিবিসি বাংলাই না, বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের অন্যান্য ভাষা বিভাগগুলোর ফেসবুক পাতাতেও একই ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। এটিই এখন বিবিসি ব্র্যান্ড।

আমরা মাঝেমধ্যেই এই ধরনের কিছু চিঠি পাই যেখানে কোন জায়গায় বিবিসির প্রতিনিধি কে সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। যেমন তাজুল ইসলামের এই চিঠি: BBC News বাংলায় রংপুর বিভাগে কে নিয়োজিত আছে, জানাবেন কি?

মি. ইসলাম। বাংলাদেশে ঢাকার বাইরে বিবিসি বাংলার কোথাও কোন শাখা নেই। নেই কোন প্রতিনিধি। তবে গুরুত্বপূর্ণ কোন ঘটনার সময় একদল স্থানীয় সাংবাদিক নানাভাবে আমাদের সাহায্য সহযোগিতা করেন। কিন্তু তারা বিবিসির পূর্ণকালীন সদস্য নন। তাদের ভূমিকা মূলত একজন সহযোগীর। তাই আপনাকে জানাচ্ছি, রংপুর বিভাগে বিবিসি বাংলা কোন সাংবাদিক প্রতিনিধি নেই।)

কুড়িগ্রামের ধরলা নদীতে একটি ডলফিনের উদ্ধার কাহিনী জানিয়েছেন এ এস লিমন:

ছবির ক্যাপশান,

ডলফিনটিকে বাঁচানোর প্রচেষ্টা।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় স্থানীয় জেলের জালে ধরলা নদীতে গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর একটি ডলফিন ধরা পড়েছে। জয়দেবকুমার এলাকার জেলে হাড্ডু মিয়া বাড়ীর পাশে ধরলা নদীতে মাছ ধরতে যায়। ৪ঠা সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ডলফিনটি ধরা পড়ে। জালে ডলফিনটি আটকে গেলে বিরল প্রজাতির এ মাছটি দেখে ঐ জেলে চিৎকার শুরু করলে আশেপাশের লোকজন এসে এগিয়ে এসে জাল থেকে ডলফিনটি ছাড়িয়ে নেয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে ডলফিনটি এক নজর দেখতে শত শত উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। এরপর ডলফিনটি ছিনাই হাট বাজারের পেট্রোল পাম্পে রাখা হয়। রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহঃ রাশেদুল হক প্রধান জানান,ডলফিনটিকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়ার জন্য রংপুর চিড়িয়াখানার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা ইতিমধ্যেই রওয়ানা দিয়েছে।

খবরটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ, মি. লিমন। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রশ্নে বাংলাদেশে জনসচেতনতা যে বাড়ছে, তা খুবই আশার কথা। কয়েক বছর আগেও আমরা খবর পেতাম যে জেলেদের জালে ধরা পড়ার পর এই ধরনের শুশুক বা ডলফিন মারা যেত। কিন্তু এখন এদের বাঁচানোর জন্য সাধারণ মানুষ নিজেরাই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এটা নি:সন্দেহে সুখবর।

রেডিও অনুষ্ঠানে প্রীতিভাজনেষুর পরিবেশনা আবার শুরু হওয়ার পর আমরা আপনাদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি চিঠি পেয়েছি। তাতে জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্তে আপনারা খুশি হয়েছেন। এব্যাপারে বিস্তারিত ব্যাখ্যা সম্পাদক সাবির মুস্তাফা গত সপ্তাহেই দিয়েছেন। তাই আর সেদিকে যাচ্ছি না।

আমাদের নিয়মিত পত্র লেখক, আর এখনকার নিয়মিত ইমেইল প্রেরক, মুকুল সরদার এবার একটি ভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন। আসুন শোনা যাক সেই চিঠি:

প্রীতিভাজনেষু শ্রোতাদের কাছে বিবিসি বাংলার জবাবদিহিতার অনুষ্ঠান। বিবিসি বাংলার অনুষ্ঠান নিয়েই প্রীতিভাজনেষুতে আলোচনা হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিবিসি বাংলার অনুষ্ঠানের বাইরে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ নানা ইস্যুতেও প্রীতিভাজনেষুতে লিখতে হয়। কারণ ফোন-ইন অনুষ্ঠানে যে কোনো ইস্যুতে কথা বলবার সুযোগ থাকে না। আমার মনে হয়, মাসে একটি বা দুটি ফোন-ইন অনুষ্ঠান অনির্ধারিত বিষয়ে হওয়া উচিৎ। এ বিষয়টিতে আমি আগেও বিবিসি বাংলার দৃষ্টি আকর্ষণ করবার চেষ্টা করেছি। আশাকরি বিষয়টি ভেবে দেখবেন।

মি. সরদার, জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক ইস্যুতে মতামত জানানোর প্ল্যাটফর্ম ঠিক প্রীতিভাজনেষু নয়। যদিও আপনারা অনেকেই প্রীতিভাজনেষুতেও এসব মতামত পাঠিয়ে থাকেন, এবং আমারও মাঝেমধ্যে চেষ্টা করি সেগুলো তুলে ধরতে। আসলে আপনাদের মতামত দেয়ার সত্যিকারের প্ল্যাটফর্ম কিন্তু ফোন-ইন। আমরা এর আগে কোন সুনির্দিষ্ট বিষয় ছাড়া ফোন-ইনের আয়োজন করেছি। কিন্তু তাতে দেখা গেছে শ্রোতারা নানা বিষয়ে মতামত দিয়েছেন। সব মতামত প্রাসঙ্গিকও ছিল না। শুনতে খাপছাড়া শোনাচ্ছিল। কোন কোন ক্ষেত্রে শুধু একতরফা মতামত শোনা গেছে। সেকারণেই বিষয়ভিত্তিক ফোন-ইনে শ্রোতারা একই বিষয়ের ওপর নানা ধরনের মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে পারছেন। সেটা শ্রোতার কাছে বেশি উপভোগ্য হবে নাকি?

তবে আপনারা ফোন-ইনের বিষয়বস্তু বাছাই করার প্রশ্নে আপনারা কিন্তু আমাদের কিছুটা সাহায্য করতে পারেন। আপনারা যদি মনে করেন কোন বিষয়ের ওপর ফোন-ইন হওয়া উচিত সেই বিষয়টি জানিয়ে আপনারা প্রীতিভাজনেষু অনুষ্ঠানের কাছে চিঠি পাঠাতে পারেন। তবে ফোন-ইনের বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনাদের মনে রাখতে হবে ঐ বিষয়টিতে যেন বিভিন্ন ধরনের মতামতের প্রতিফলন ঘটানোর সুযোগ থাকে। অর্থাৎ যে প্রশ্নের জবাব শুধু একধরনের হয়, সেই প্রশ্ন আমরা নির্বাচন করি না। ধন্যবাদ।

বাংলাদেশ সংলাপের স্মৃতি-কাতরতা থেকে এই চিঠি পাঠিয়েছেন মোঃ আজিনুর রহমান লিমন, নীলফামারীর ডিমলা থেকে: বিবিসি বাংলার "বাংলাদেশ সংলাপ" ছিল একটি অসাধারণ আয়োজন। শ্রোতা ও দর্শকপ্রিয় হয়ে উঠেছিল বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপ অনুষ্ঠানটি। গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে সংলাপ অনুষ্ঠিত হতো। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই অনুষ্ঠানটি অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছিল। এটি দেশের দায়িত্বশীলদের ভুল সংশোধনের মাধ্যম ছিল বলে আমি মনে করি। কিন্তু এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। বিবিসি বাংলা "বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের" ব্যাপারে অনাগ্রহী কেন?

বিবিসি সংলাপের ব্যাপারে অনাগ্রহী নয়। আসলে যে প্রকল্পের অধীনে এই অনুষ্ঠানটি করা হতো, সেই প্রকল্পটি শেষ হয়ে গেছে। এছাড়া এর মধ্যে লোকবলের একটা প্রশ্ন রয়েছে। আগে বাংলাদেশ সংলাপ ছিল বিবিসি বাংলার একমাত্র টিভি অনুষ্ঠান। এখন হয়েছে তিনটি -- প্রবাহ টিভির দুটি পর্ব এবং ক্লিক। ফলে সংলাপ আয়োজনের সাংগঠনিক ক্ষমতা এই মুহূর্তে নেই। তবে এই ধরনের অনুষ্ঠান করতে আমাদের যে প্রবল আগ্রহ রয়েছে, সেই বিষয়টা নিশ্চয়ই আপনাদের অজানা নয়। তাই ভবিষ্যতে সুযোগ পেলেও সংলাপ আর ফিরিয়ে আনা হবে না, সেই কথা বলার সময় এখনও আসেনি।

বাহরাইন থেকে মো. সিয়ামের এই চিঠি: আসালামুআলাইকুম, ভাই আমি বিবিসি রেডিও নিয়মিত শুনতাম। আজ বহুদিন হলো শুনতে পারি না। দয়া করে জানাবেন।

বোঝা যাচ্ছে বিবিসি বাংলার রেডিও অনুষ্ঠানের সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলি আপনার নজর এড়িয়ে গেছে। আসলে শর্টওয়েভ রেডিও থেকে বিবিসি ধীরে ধীরে সরে আসছে। এর বাইরে রেডিও অনুষ্ঠানেও কাটছাঁট হচ্ছে। তাই আপনার জন্য সবচে ভাল উপায় হবে ফেসবুকের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শোনা। আপনি আমাদের কাছে এই মেসেজটি পাঠিয়েছেন ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে। তাই ধরে নিচ্ছি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বিবিসি বাংলার ফেসবুক পাতায় আমরা প্রতিদিনের প্রবাহ অনুষ্ঠানের লাইভ স্ট্রিমিং সম্প্রচার করে থাকি। আপনি বিবিসি বাংলার ফেসবুক পাতায় গিয়ে সরাসরি অনুষ্ঠানের ভিডিও দেখতে পাবেন, বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যে সাড়ে সাতটায়। এবং অনুষ্ঠানের পরেও এই ভিডিওটি সেখানেই রাখা থাকে, যাতে সুবিধে মত সময়ে আপনারা সেটা দেখতে পারেন। আপনাকে ধন্যবাদ।

কুড়িগ্রাম থেকে ফরিদুল হকের এই পরামর্শ: প্রিয় বিবিসি বাংলা, গত ১৪ই আগস্ট থেকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকল সিম কোম্পানিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে সকল নম্বরে একই দাম চালু করার জন্য। কিন্তু এতে গ্রাহককে ফাঁসিয়ে তাদের গলায় ছুড়ি চালানোর মতো অবস্থা করে এখন প্রতি মিনিট বাবদ এসডি ও ভ্যাটসহ ১ টাকা ২৭ পয়সা বা তারও বেশী করে কেটে নেয়া হচ্ছে । মিনিট প্রতি যেটার দাম আগে ছিল ৬০ পয়সা বা কিছু কিছু ক্ষেত্রে ৩০ পয়সা। কিন্তু এখন সিম কোম্পানিগুলোর এই রকম ডাকতি করার কারণ কি? বিবিসি কি একটি অনুসন্ধানীমূলক প্রতিবেদন তৈরি করতে পারে না?

অবশ্যই পারে মি. হক। এবং বিবিসি সেটা করবেও। ঐ খবরটি যখন প্রথমবারের মতো প্রচার করা হয় তখনই আমরা এই ব্যাপারে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী এবং এই খাতের বিশেষজ্ঞদের মতামত প্রচার করেছি। আমার মনে হচ্ছে এখন সময় এসেছে এই ব্যাপারটি আরও ভালভাবে খতিয়ে দেখার। আপনার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।

দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রর ভু-রাজনৈতিক স্বার্থ প্রসঙ্গে লিখেছেন ভোলা থেকে মোঃ. জিল্লুর রহমান: ২রা সেপ্টেম্বর রোববার প্রবাহ অনুষ্ঠানে পাকিস্তান সরকারতে প্রতিশ্রুত সামরিক সহযোগিতা বন্ধের খবরের ওপর মালয়েশিয়ায় কর্মরত সাহায্য বন্ধের বিষয়ে মালয়েশিয়ায় কর্মরত সামরিক বিশ্লেষক ডঃ সৈয়দ মাহমুদ আলীর সাক্ষাৎকারটি খুব ভাল লেগেছে। তাঁর সাক্ষাৎকারের প্রতিটি বক্তব্য অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত ও বাস্তব। বিশেষ করে বিগত ১৭ বছর যাবত তালেবানদের সাথে আমেরিকার যুদ্ধ যে কোন কার্যকর ফলাফল বয়ে আনেনি অর্থাৎ আমেরিকা তালেবানদের পুরোপুরি পরাজিত করতে পারেনি, তাঁর এ বিশ্লেষণটি খুবই ভাল লেগেছে। এখানে আমার একটি প্রশ্ন, এক সময় লন্ডনে বসবাসরত সৈয়দ মাহমুদ আলীর সামরিক বিশ্লেষণ হরহামেশাই শুনতাম, উনি কী সেই সৈয়দ মাহমুদ আলী?

তিনিই সেই সৈয়দ মাহমুদ আলী। লন্ডন ছেড়ে তিনি এখন মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন। এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করছেন। তবে তার আরেকটি পরিচয় আছে। আমি জানিনা আপনি সেটা জানেন কিনা। সৈয়দ মাহমুদ আলী এক সময় বিবিসি বাংলার সম্পাদক ছিলেন। বিবিসি বাংলায় আমরা অনেকেই এক সময় তার সাথে কাজ করেছি।

বিবিসির একটি অনুষ্ঠান ভাল লেগেছে বলে জানিয়ে লিখেছেন বগুড়ার শেরপুর থেকে সম্পদ পোদ্দার বলরাম: সুপ্রিয় বিবিসি কর্তৃপক্ষ, গত ৩১শে আগস্ট শুক্রবার বিবিসির সান্ধ্য অনুষ্ঠান প্রবাহে সরাসরি আলোচনা অনুষ্ঠানটি খুব ভালো লেগেছে। অনুষ্ঠানটি ছিল সংসদের বাইরে থাকা বিরোধী দল বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে। তারেক শামসুর রেহমান ও মির্জা তসলিমা সুলতানার রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ছিল বেশ তথ্যবহুল। এধরনের রাজনৈতিক বিশ্লেষণমুলক সরাসরি অনুষ্ঠান বিবিসি এর আগে প্রায়শই প্রচার করেছে। যা বেশ শ্রোতা-নন্দিত ও জনপ্রিয় হয়েছে। কেন জানি না এধরনের অনুষ্ঠান বিবিসি ইদানীং কম প্রচার করছে।

আসলে এই ধরনের আলোচনার ব্যাপারটা অধিকাংশ সময়ে নির্ভর করে দেশের পরিস্থিতির ওপর। রাজনৈতিক মহলে বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটলে আমরা চেষ্টা করি তার ওপর কিছু বিশ্লেষণমুলক অনুষ্ঠান প্রচার করতে। যাতে খবরের বাইরে ঐ ঘটনা থেকে শ্রোতারা কিছুটা লাভবান হতে পারেন। অনুষ্ঠানটি আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম। আপনাকে ধন্যবাদ।

অনুষ্ঠান সম্পর্কে আরেকটি চিঠি। রংপুরের কাউনিয় থেকে বিলকিস আক্তার: গত ৫ই সেপ্টেম্বর বিবিসি বাংলা'র ফেসবুক পেজে একটি খবর খুব মনোযোগ সহকারে দেখছিলাম, আর একজন নারী হিসেবে খুব গর্বিত হচ্ছিলাম। খবরটি বিস্তারিত পড়ে বুঝলাম, ইন্দোনেশিয়ায় সদ্য সমাপ্ত এশিয়ান গেমসে অ্যাথলেটিক্সের বেশ কঠিন ইভেন্ট হেপ্টাথলনে সোনা জিতেছেন পশ্চিমবঙ্গের তরুণী স্বপ্না বর্মণ। জলপাইগুড়ির একেবারে পিছিয়ে পড়া ছোট্ট এক গ্রামের রিকশা ভ্যান-চালক বাবা আর চা বাগানের শ্রমিক মায়ের সন্তান স্বপ্না। শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকা সত্ত্বেও করেছে বিশ্বজয়! পায়ের জুতো পর্যন্ত যার ঠিক নেই! স্বপ্না, তুমি আরো এগিয়ে যাও। তোমার জন্য একজন নারী হিসেবে আমি আশীর্বাদ করি। আমি প্রীতিভাজনেষুর মাধ্যমে স্বপ্নার স্বপ্ন পূরণের জন্য অভিনন্দন ও শুভকামনা জানালাম। স্বপ্না সত্যিই তুমি আমাদের "স্বপ্ন"।

আপনার চিঠির জন্য ধন্যবাদ বিলকিস আক্তার। স্বপ্নার গল্প আপনাদের অনুপ্রাণিত করেছে জেনে ভাল লাগছে।

খুলনার কপিলমুনি থেকে লিখেছেন মোঃ শিমুল বিল্লাল বাপ্পী: বাংলাদেশে অল্প কিছুদিন পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন । একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন ও ক্ষমতাসীন দল চাচ্ছে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহার করতে। কিন্তু বিরোধী জোট ইভিএম চায় না। তাদের সন্দেহ সরকার কোন দূরভিসন্ধী করতে পারে। দেশের সাধারণ মানুষ নতুন এই পদ্ধতি সম্পর্কে ভাল জানে না। ইভিএম পদ্ধতি ভাল কি খারাপ - এ সম্পর্কে বিবিসি বাংলায় বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করলে উপকৃত হবো।

ইভিএম সম্পর্কে কিছু খবরাখবর আমরা ইতোমধ্যেই দিয়েছি। আসলে যখন নিশ্চিতভাবে জানা যাবে যে আসছে নির্বাচনে কোন্ পর্যায়ে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, তখনই সেই ব্যাপারে বিশদ খবরাখবর প্রচার করা যেতে পারে। আপনার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।

বিবিসি বাংলার খবর সম্পর্কে আপনাদের মতামত, প্রতিক্রিয়া, অভিযোগ কিংবা পরামর্শ থাকলে আমাদের কাছে লিখুন:

ইমেইল: bengali@bbc.co.uk

ফেসবুক: www.facebook.com/BBCBengaliService/