পরিবহন ধর্মঘট: 'শ্রমিকদের বাধায় রাস্তায় সিএনজি চালিত অটোরিকশাও চলতে পারছে না'

ছবির উৎস, Getty Images
পরিবহন ধর্মঘটের কারণে দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ। ফাইল ছবি।
বাংলাদেশে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে দেশজুড়ে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
ভোর থেকে ঢাকার রাস্তায় হাজার-হাজার মানুষ বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
কর্মস্থলে পৌঁছতে চরম বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন তারা। একই চিত্র দেশের অন্য জায়গা থেকেও পাওয়া যাচ্ছে।
এমনকি যারা সিএনজি চালিত অটোরিকশায় যাতায়াত করতে চেয়েছেন, তাদের অনেকেই পরিবহন শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়েছেন।
সিলেটের বাসিন্দা আব্দুস সামাদ বিবিসি বাংলার ফেসবুক পাতায় মন্তব্য করেছেন যে সিএনজি চালিত অটো রিক্সা থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হচ্ছে।
মি: সামাদের বর্ণনা এ রকম, " পরিবহন হর্তাকর্তারা বলেছেন শুধু মাত্র বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। কিন্তু সিলেটে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে সিএনজি অটো থেকে নামিয়ে দেয়া হয় সাধারণ যাত্রীদের।"
ঢাকার বাসিন্দা আরিফ হাসান সাকিব লিখেছেন, তিনি রাস্তায় প্রায় দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কোন যানবাহন পাননি।
আরো পড়ুন:
ছবির উৎস, BBC Bangla
পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের সময় রাজধানী ঢাকার মিরপুরের চিত্র।
মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চেয়েছিলেন ক্লাসে যোগ দেবার জন্য।
মি: সাকিব লিখেছেন,"একটা বাসও পাইনি। ক্যাম্পাসের বিআরটিসির বাসটাও ওরা বের হতে দেয়নি মিরপুর বাস ডিপো থেকে।"
সকালে রাস্তায় গণ-পরিবহন না থাকায় অনেকে অধিক ভাড়া গুনেছেন।
শামসুল হক লিখেছেন, " লোকজন বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে অধিক টাকার বিনিময়ে চলছে গন্তব্যে। আমি আজ ৬ কিলোমিটার ১০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা দিয়ে ১৫ কিলোমিটার ঘুরে আসলাম।"
ঢাকার রাস্তায় ছিল রিক্সার রাজত্ব। শহরের যেসব রাস্তায় রিক্সা চলাচল নিষিদ্ধ সেসব জায়গায় আজ অনায়াসে রিকসা চলছে।
ছবির উৎস, Getty Images
সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে গত ২৭ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশ করে পরিবহন শ্রমিকরা।
মোখলেসুর রহমান লিখেছেন, "১০ টাকা বাজেট। সেখানে যদি ১৫০ টাকা রিক্সা ভাড়া লাগে তখন ভোগান্তি কাকে বলে আপনারাই বলুন।"
আগামীকাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন কি না সেটি নিয়ে অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
জোয়াদ খান ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, "আমাদের কাল চট্টগ্রাম ভার্সিটিতে এক্সাম। আমাদের গাড়িকেও যেতে দিচ্ছে না। এসব হয়রানির মানে কি?"
ছবির উৎস, Getty Images
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক বিক্ষোভ করেছিল।
সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বিবিসি বাংলাকে বলেন, "সড়ক দুর্ঘটনার মামলা যদি জামিন অযোগ্য হয়, তাহলে তো পরিবহন শ্রমিকদের পক্ষে গাড়ি পরিচালনা করা সম্ভব না। আমরা এই আইন বাতিলের কথা বলি না, সংশোধনের কথা বলি।"
বাংলাদেশে অনেক অপরাধ আছে যেগুলো জামিন অযোগ্য। তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা আইনের ক্ষেত্রে এ বিধান থাকলে সমস্যা কোথায়?
এমন প্রশ্নে ওসমান আলী বলেন, " আপনি ক্রিমিনাল ল'র (আইন) সড়ক দুর্ঘটনা মিলাবেন?"
পরিবহন ধর্মঘটের মাধ্যমে তারা যাত্রীদের জিম্মি করছেন না বলে মনে করেন ওসমান আলী।
তিনি বলেন, তারা 'গণতান্ত্রিক আন্দোলন' করছেন এবং সরকার তাদের কোন নিয়োগপত্র দেয়নি।
তিনি বলেন, ধর্মঘটে যাবার আগে তারা সরকারকে স্মারকলিপি দিয়েছেন এবং আরো নানা উপায়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন