স্বাস্থ্য ভালো রাখার কয়েকটি সহজ উপায়

ছবির উৎস, Getty Images
মেডিটেশনের মাধ্যমে নিজের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে নিশ্চিত করতে পারেন সুস্বাস্থ্য
নতুন বছরে নিজের স্বাস্থ্যে দিকে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেয়ার কথা ভাবছেন?
আপনি হয়তো ভাবছেন নিয়মিত যোগব্যায়াম করে, হাঁটাহাঁটি করে, খাদ্য তালিকার শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাবার নিয়ন্ত্রণ করে স্বাস্থ্য সুরক্ষার পথে চলবেন।
কিন্তু যদি হঠাৎ বলা হয় যে, কষ্ট করে অতো কিছু করার দরকার নেই বরং একটা মাত্র কাজ করলেই চলবে। তাহলে আপনি কী করবেন?
চট-জলদি নিশ্চয়ই সেই প্রক্রিয়াটিই অনুসরণ করবেন?
হ্যাঁ, আপনার জন্যই বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে বিবিসি এনেছে স্বাস্থ্য-সুরক্ষার সহজ তরিকা।
নিজের মনের ইচ্ছের দিকে নজর দিন
মানুষ সারাক্ষণ দেহের সুস্থতা নিয়ে ভাবে। আর এটি সহজও বটে।
কিন্তু ব্রিটেনের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস ও এক্সারসাইজ বিষয়ক শিক্ষক ড. নেডাইন স্যামি বলেছেন, আমাদের নিজেদের মনের উপরে বিশেষ খেয়াল দেয়া দরকার।
তার মতে, আত্ম-সচেতনতা বাড়িয়ে মনের উপরে আমাদের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো সম্ভব।
ড. স্যামি বলছিলেন, আত্ম-সচেতনতা এমন এক জিনিষ যা মানুষকে তার নিজের আবেগ, অনুভূতি ও ইচ্ছে-অনিচ্ছা অনেক নিবিড়ভাবে চিনতে সহায়তা করে।
তার মতে, নিজের অনুভূতিকে চেনার মধ্য দিয়েই মানুষ নিজের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার দিকে সবচে' বেশি মনোযোগ দিতে পারে।
নিজের সম্পর্কে ব্যক্তির ধারণা যত নির্ভুল ও গভীর হবে, ততই সে তার নিজের শক্তি ও দুর্বলতার দিকগুলো জানবে। এই জানার মাধ্যমেই নিজের দুর্বলতাগুলোকে কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়ে উঠে বলে মনে করেন ড. স্যামি।
আরো পড়তে পারেন:
ছবির উৎস, Getty Images
কুকুর পোষার কিছু স্বাস্থ্যকর দিব রয়েছে বলে মনে করেন চিকিৎসাবিদরা
কুকুর পুষতে পারেন
শারীরিকভাবে কর্মক্ষম থাকতে জিমে যাওয়া বা ভোরে দৌড়ানোর চেয়েও আপনাকে আরো বেশি কাজে কায়িক পরিশ্রমে ব্যস্ত করে রাখবে পোষা কুকুর।
এবারিস্টউইথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষক ড. রিস থেচার বলছিলেন, জিম হয়তো কারো কারো জন্য একটা ভালো সমাধান হতে পারে। কিন্তু তা সবার জন্য নয়।
তাই এক্ষেত্রে মোক্ষম উপায় হতে পারে একটি কুকুর পোষা।
কারণ কুকুরকে যদি দিনে দুইবার অন্তত ৩০ মিনিট কর হাঁটাতে হয় তখন আপনিও নিজে থেকেই হাঁটবেন। আর এভাবেই রোজকার হাঁটার ভেতর দিয়ে শরীর ও মনের সুরক্ষা হবে।
ছবির উৎস, Getty Images
সুস্বাস্থ্য অর্জন করতে হলে বিভিন্ন ধরণের উদ্ভিজ্জ খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা
সপ্তাহে ৩০ পদের সবজি ও ফল-ফলাদি
লন্ডন কিংস কলেজের একজন গবেষণা ফেলো ড. মেগান রসি বলছিলেন, শুধু বেশি করে সবজি ও ফল-ফলাদি খেলেই হবে না। এর মধ্যে বিভিন্ন জাতের ভিন্নতাও থাকা জরুরি দরকার।
ড. রসির মতে, প্রতি সপ্তাহে সব পদ মিলেয়ে যদি ভিন্ন-ভিন্ন ৩০ পদের সবজি ও ফল-ফলাদি খাওয়া যায় তবে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।
আমাদের পাকস্থলীতে মাইক্রোবায়োম বলে একটি ব্যাকটেরিয়া আছে। এই ব্যাকটেরিয়া মানুষের সুস্বাস্থ্যের উপরে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে।
তাই এক্ষেত্রে যত বেশি সম্ভব লতা-পাতা ও উদ্ভিজ্জ সবজি খেতে পরামর্শ দিয়েছেন ড. রসি।
বেশি করে হাসুন
ড. জেমস গিল বলছেন, মানুষের উচিত সুখী হওয়ার চেষ্টা করা।
এখন আপনার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন আসতে পারে যে, সুখী হওয়া কি আর চাট্টিখানি কথা? নাকি চাইলেই সুখী হওয়া যায়?
ছবির উৎস, Getty Images
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশি হাসলে সুখী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে
এক্ষেত্রে ড. গিলের উত্তর হচ্ছে, সহজেই সুখী হওয়া যায়।
সুখী থাকার সহজ উপায় হিসেবে বেশি করে হাসার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান
হ্যা, পর্যাপ্ত ঘুমের কথাই বলা হয়েছে।
একজন পরিণত বয়সের মানুষের রাতে গড়ে দৈনিক ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম দরকার।
কিন্তু একটানা যদি ঘুমের ঘাটতি চলতে থাকে তবে শরীরের উপরে এর খুব নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
এক্সেটার ইউনিভার্সিটির স্পোর্ট এন্ড হেলথ সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক ড. গেভিন বাকিংহাম বলেছেন, ঘুম কম হলে মানুষের কগনিটিভ ফাংশান বা নতুন জিনিস শেখার ক্ষেত্রে ক্ষতি হয়।
ঘুমের ঘাটতির নেতিবাচক প্রভাবে এমনকি অনেক সময় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও ব্যক্তি দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগতে পরে বলে জানালেন ড. বাকিংহাম।
তাই, দেহ ও মনের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পর্যাপ্ত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই।