মির্জা ফখরুল: 'আওয়ামী লীগ ছিল গৌণ, মূল কাজ করেছে পুলিশ আর প্রশাসন'

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: 'নির্বাচন ছিল তামাশা'

"এটা তো নির্বাচন হয়নি। এটা একটা প্রহসন। একটা তামাশা হয়েছে।"

ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর নির্বাচন সম্পর্কে তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা বলেছেন।

ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর নিজের নির্বাচনী এলাকা ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকায় ফিরছেন এখন তিনি। ঢাকা ফেরার পথেই তিনি টেলিফোনে বিবিসি বাংলাকে এই সাক্ষাৎকার দেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "কীভাবে শক্তি ব্যবহার করতে হয় রাষ্টযন্ত্রকে, তার এক নতুন নমূনা দেখলাম আমরা। আমরা কখনোই এরকম নির্বাচন অতীতে দেখিনি। যেখানে পুলিশ, র‍্যাব, প্রশাসন - সবাই মিলে নির্বাচন করছে। আওয়ামী লীগ তো গৌণ। মূল কাজ করছে পুলিশ আর র‍্যাব।"

তিনি বলেন, "এই নির্বাচনের সবচেয়ে উদ্বেগজনক ব্যাপারটা হচ্ছে এখানে একটি ইনস্টিটিউশন হিসেবে নির্বাচন জিনিসটাকেই ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। একদম ধ্বংস হয়ে গেল। মানুষের আস্থা পুরোপুরি চলে গেল।"

আরও পড়ুন:

নির্বাচনের ফলাফল যখন স্পষ্ট হয়ে যাবে, তখন তারা কী করবেন? এ প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, রাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ বৈঠকে বসবেন। সেখান থেকেই তারা ঠিক করবেন তাদের করণীয়।

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

বিএনপির অভিযোগ তাদের সমর্থকদের ভোট দিতে বাধা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, "ফলাফল মানার তো প্রশ্নই ওঠে না। এটা তো কোন নির্বাচনই হয়নি। কারচুপি শুধু নয়, এটা কোন নির্বাচনই হয়নি।"

তাঁর মতে, এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তাদের কোন প্রতিপক্ষ ছিল না। প্রতিপক্ষ ছিল রাষ্ট্রযন্ত্রের কতগুলো প্রতিষ্ঠান।

কী বলছে সরকার:

প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম ভোটে কারচুপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।

বিবিসিকে তিনি বলেন, "আমি এটা দৃঢ়ভাবেই অস্বীকার করবো। কারণ প্রশাসনের কোন ভূমিকা ছিল না এখানে। পুলিশ যে এরকম করেছে, আমাদের কাছে তার কোন রিপোর্ট আসে নাই।"

ছবির ক্যাপশান,

চট্টগ্রামের লালখান বাজারের শহীদ নগর সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট শুরু হওয়ার আগেই ব্যালট পেপার ভর্তি ব্যালট বক্স।

এইচ টি ইমাম জানান, বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর অনেক ব্যাপক ভোটে জিতছেন বলে তাঁর কাছে তথ্য আসছে।

তিরিশ জনের মতো বিরোধী প্রার্থী যে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন কারচুপির অভিযোগ তুলে, সেটাকে কী বলবেন—এ প্রশ্নের উত্তরে এইচ টি ইমাম বলেন, "আমরা তো এটা আগে থেকেই আশংকা করছিলাম। আমরা আভাস পাচ্ছিলাম যে বিএনপি এরকম নিশ্চিত পরাজয় জেনে, আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল যে মাঝপথেই হয়তো হঠাৎ করে নির্বাচন থেকে বেরিয়ে যাবেন বা অন্য কোন রকম ঘোষণা দেবেন।"

বিবিসির সংবাদদাতা চট্টগ্রামের একটি কেন্দ্রে ভোট শুরু হওয়ার আগেই ব্যালট পেপারে ভর্তি ব্যালট বক্স দেখতে পেয়েছেন। এটা কীভাবে হলো জানতে চাইলে এইচ টি ইমাম বলেন, "এটা তো অনুসন্ধানের ব্যাপার। কোন কেন্দ্রে কোথায় দেখেছেন যদি জেনে থাকেন, এবং সেটি যদি নির্বাচন কমিশনকে তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে থাকেন, তাহলে তো নির্বাচন কমিশন নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে।"