বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বিমান ছিনতাই চেষ্টা ব্যর্থ, অভিযানে ছিনতাইকারী নিহত

ছবির উৎস, STR
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে সেনা সদস্যদের একটি দল
চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিমানের একজন যাত্রী ছিনতাই চেষ্টা করলেও, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেটি ব্যর্থ করে দিয়েছে।
রাত সোয়া সাতটার দিকে সেনা কম্যান্ডোদের অভিযানে সন্দেহভাজন ছিনতাইকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়। পরে সে মারা যায়।
চট্রগ্রামে সেনানিবাসের জিওসি মে. জে. মতিউর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বিমানের ভেতরে অভিযান চালানোর সময় ঔ ব্যক্তিকে নিবৃত করার চেষ্টা করা হয়। ঐ ব্যক্তি আত্মসমর্পনে অস্বীকৃতি জানালে গুলি চালানো হয়। পরে তার মৃত্যু হয়েছে।
জে. রহমান জানান, লে. কর্নেল ইমরুলের নেতৃত্বে একটি সেনা কম্যান্ডো দল মাত্র আট মিনিটে অভিযান শেষ করে। তিনি জানান, এই কম্যান্ডো দলটিই ঢাকায় হলি আর্টিজান সন্ত্রাসী হামলার মোকাবেলায় অভিযান পরিচালনা করেছিল।
জে. রহমান জানান, নিহত যাত্রীটি বলেছিল, তার নাম মাহাদি। সে প্রধানমন্ত্রীএবং তার স্ত্রীর সাথে কথা বলতে চেয়েছিল।
সকল যাত্রী ও ক্রু সুস্থ রয়েছেন বলে কর্মকর্তারা বলছেন।

ছবির উৎস, STR
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের রানওয়েতে বিজি১৪৭
এই ঘটনার পর একটি সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ''কথিত ছিনতাইকারী ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছে। তার কাছে একটি অস্ত্র ছিল এবং বুকে বোমা বাঁধা থাকতে পারে। সেরকম তার বাধা রয়েছে।''
''তিনি পাইলটের মাথায় অস্ত্র ধরে দাবি করেছিলেন যে, তার স্ত্রীর সঙ্গে সমস্যা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন।''
বিকাল পাঁচটার দিকে ওই ঘটনা শুরুর পর থেকেই বিমানটি ঘিরে রেখেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের সঙ্গে সেনা কমান্ডো ও বিমান বাহিনীর সদস্যরাও যোগ দেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানিয়েছে, সাতটার পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিমানে অভিযান শুরু করেন।
রাত আটটা থেকে বিমানবন্দর আবার খুলে দেয়া হয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মহিবুল হক বিবিসিকে বলেছিলেন, বিমানটি জরুরি অবতরণের পর পাইলট ও বেশিরভাগ যাত্রীকে বের করে আনা হয়। তবে একজন ক্রু ও সন্দেহভাজন যাত্রী ভেতরে রয়েছে। তার সঙ্গে আলোচনা চলছে।
তবে তাদের সাথে কী আলোচনা চলছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি মি: হক।

ছবির উৎস, Google Maps
চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
এক যাত্রীর ভাষ্য
ওই বিমানটির একজন যাত্রী, বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদল স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ''বিমানে একজন যাত্রী অস্ত্র নিয়ে বিমানটি হাইজ্যাক করার চেষ্টা করেছিল। সে বাঙ্গালি। সে গুলী করেছে তবে সব যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়েছে। পাইলট আমার কাছে এসেছিল, সে বলেছে হাইজ্যাকার একজন, সে গুলি করেছে। পাইলট তাকে পারসুয়েট করার চেষ্টা করেছে। হাইজ্যাকার বলেছে, সে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চায়।''
বিমানে থাকা একজন যাত্রী ওসমান গণি সাংবাদিকদের বলেছেন, ঢাকা থেকে বিমানটি রওনা হওয়ার একটু পরেই একজন যাত্রী ককপিটের দিকে যায়। এরপর আমরা কিছু গুলির শব্দ শুনতে পাই।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে থাকা একজন যাত্রী শিউলি রানী দে স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলছেন, ''আমার বিমান ছিল ৬টা ২০ মিনিটে। তার আগেই আমি বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট অবতরণ করতে দেখি। তখন আমি দেখতে পাই, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, র্যাবের গাড়িগুলো গিয়ে বিমানটি ঘিরে ফেলেছে।''