করোনাভাইরাস নিয়ে অবিশ্বাস, জুমার নামাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ক্ষোভ

ছবির উৎস, Stephanie Keith
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে আমেরিকায় সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিউ ইয়র্ক
কোভিড-১৯। করোনাভাইরাস পরিবারের যে নতুন সদস্যর আগমনের সংবাদ দিয়ে নতুন বছর শুরু হয়েছিল, সেই ভাইরাস ক্রমশ গোটা বিশ্বকে গ্রাস করতে বসেছে। প্রথমে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, তারপর ইরান, ইতালি, ফ্রান্স এবং স্পেন হয়ে আমেরিকা। পথে ব্রিটেনকেও বড় একটা ধাক্কা দিয়ে যাচ্ছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত আর বাংলাদেশ চলে গেছে পুরোপুরি 'লকডাউন'-এ, (যদিও মুখে বলছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে)। এখন মনে হচ্ছে বিশাল আকারের দেশ রাশিয়াও তৈরি হচ্ছে এই ভাইরাস মোকাবেলার জন্য।
দুটি মহাদেশ - আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকায়, এই ভাইরাসের প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম। তবে আর কত দিন?
এই একটি বিষয় বিশ্বের সকল সংবাদ মাধ্যমের সকল সময় দখল করে নিয়েছে। ব্যাপক পরিবর্তন এনে দিয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের জীবনযাত্রার ধরনে।

ছবির উৎস, Spencer Platt
নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীর জন্য অপেক্ষা করছে।
কাজেই, এ'সপ্তাহে শুধু করোনাভাইরাস নিয়ে প্রশ্ন, প্রতিক্রিয়া এবং মতামত-এর উত্তর দেয়া হবে। শুরু করছি ঝিনাইদহ থেকে পাঠানো একটি চিঠি দিয়ে, লিখেছেন কাজী সাঈদ:
''বিবিসি বাংলায় নিউইয়র্ক থেকে একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকারের সাক্ষাৎকার থেকে জানতে পারলাম, মার্কিন কর্তৃপক্ষ টেস্টিং কিট বাজারে আনতে এত দেরি করেছে যে, করোনাভাইরাস আক্রান্ত অসংখ্য লোক টেস্ট করাতে না পেরে দিনের পর দিন বাড়িতে বসে থেকেছেন, এবং এর ফলে সংক্রমণ পুরো কমিউনিটিতে ছড়িয়ে পড়েছে। ঠিক এই চিত্র বাংলাদেশে ঘটার সম্ভাবনা কতটা? যদি কমিউনিটি পর্যায়ে সংক্রমণ শুরু হয়, বিপর্যয়ের যে সীমা থাকবেনা, সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।''
আপনি ঠিকই বলেছেন মি. সাঈদ, কমিউনিটি পর্যায়ে সংক্রমণ শুরু হলে, অর্থাৎ সংক্রমণের উৎস যখন কর্তৃপক্ষ চিহ্নিত করতে পারবে না, তখন বড় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুরু থেকেই বলে এসেছে যে এই মহামারি থামানোর প্রধান অস্ত্র হচ্ছে সন্দেহভাজনদের পরীক্ষা করা, যাদের মধ্যে সংক্রমণ হয়েছে তাদেরকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে চিকিৎসা দেয়া এবং তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন তাদের খুঁজে বের করে তাদের পরীক্ষা করা। এই পদ্ধতির প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে টেস্টিং এবং বাংলাদেশে যে সেটা খুব কম হচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।

ছবির উৎস, Getty Images
বিশ্বের সবখানেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক চাপ পড়েছে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে
একই সাক্ষাৎকার নিয়ে আরো লিখেছেন সাভারের ভাকুর্তা থেকে মোহাম্মদ সিরাজুদ্দিন মাস্টার:
''আমেরিকাতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ যে ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা পহেলা এপ্রিল বিবিসি বাংলার প্রবাহ অনুষ্ঠানে শুনে খুবই খারাপ লেগেছে। এমন একটি উন্নত দেশে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির কী কারণ হতে পারে তা আমার মাথায় কাজ করছে না।''
নিউ ইয়র্কের ডাক্তারের কথা শুনে যা বুঝলাম মি. সিরাজুদ্দিন মাস্টার, মার্কিন সরকার অনেক দেরিতে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। কোন প্রস্তুতি ছিল না এবং পর্যাপ্ত সংখ্যায় টেস্টিং হচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মাত্র গত কয়েক দিনে স্বীকার করেছেন পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে। অনেক দেশের সরকার মনে করছে নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সংক্রমণের মাত্রা এবং গতি কমিয়ে আনার জন্য অপরিহার্য। বাংলাদেশ সরকার সেটা করার জন্য সারা দেশে যাতায়াত, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত বন্ধ করে দিয়েছে।

ছবির উৎস, Anadolu Agency
ঢাকার বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজে উপচে পড়া ভিড়।
তবে অনেকে মনে করছেন গ্রামাঞ্চলে আরো পদক্ষেপ নিতে হবে, যেমন লিখেছেন ঢাকা থেকে জাহাঙ্গীর রনি:
''প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে আরও নজরদারি বাড়াতে হবে। কারণ গ্রামের মানুষ এখনও পুকুর ঘাটে,নদীর পাড়ে,কল পাড়ে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে। আগের তুলনায় বেশি সংখ্যক মানুষ মসজিদ মুখী। বিভিন্ন মসজিদে তাবলীগ-ই-জামাত দল আছে। এই জামাত দল ও স্থানীয় মুসলিমদের সুরক্ষার জন্য আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে প্রশাসনকে। প্রতিটি মসজিদ যদি প্রতিবার আযান এর পূর্বে করোনা মহামারি প্রতিরোধের করণীয়গুলো বলে তাহলে গ্রামের মানুষ আরও সচেতন হবে। পারলে অন্যান্য দেশের মত মসজিদে জামাত বন্ধ করা হোক।
''যেমন এক হাদিসে (বোখারি- ৫৭২৯) বলা আছে, 'নবীজি সফরে বৃষ্টি বা শীতের রাতে মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে বলতেন এবং সাথে সাথে এ কথাও ঘোষণা করতে বলতেন যে, 'তোমরা আবাসস্থলেই নামাজ আদায় করে নাও!'
খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলেছেন জাহাঙ্গীর রনি। সৌদি আরব, আমিরাত সহ অনেক মুসলিম দেশে জামাতে নামাজ পড়া বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু সে পদক্ষেপ বাংলাদেশ সরকার এখনো নিতে পারছে না। এখানে সরকারের দুর্বলতা প্রকাশ পাচ্ছে বলেই আমার মনে হয়।

ছবির উৎস, Pacific Press
বাংলাদেশে মসজিদে নামাজ অব্যাহত আছে।
বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখছেন গাইবান্ধার দারিয়াপুর থেকে মাহবুব রহমান মামুন:
''সাধারণ ও খেটে খাওয়া মানুষদের ত্রাণ বিতরণের জন্য ইউএনও-র কর্মকর্তারা গাদাগাদি করে যেভাবে খাদ্য বিতরণ করছে, তাতে করে মনে হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব তাদের জন্য নয়।তাহলে তারা কি বুঝাতে চায়? সামাজিক দূরত্ব শুধু সাধারণ মানুষের জন্য? করোনা ভাইরাস কি শুধু সাধারণ মানুষদের দ্বারাই সংক্রমিত হয়? নাকি আপনাদের ভাষায় মসজিদ খোলা রাখলে এই ভাইরাস বেশি ছড়ায়?
''সেদিন উপস্থাপক একজন ইমামকে প্রশ্ন করলেন সৌদিতে এবং পাকিস্তানে যেখানে মসজিদ বন্ধ সেখানে বাংলাদেশে ধর্মের বিষয় কি এতই শক্তিশালী? তার মানে কি এই নয়, যে বাংলাদেশে মসজিদ বন্ধ করতে আপনারা প্রশাসন ও সরকারকে উস্কে দিচ্ছেন?''
যে কোন বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অপ্রিয় প্রশ্ন করাই আমদের কাজ মি. রহমান। কোন বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করলেই সেটা 'উস্কে' দেয়া হবে কেন? বিষয়টা তো আসলেই সেরকম যে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা মানেই হলো সকল প্রকার জনসমাগম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা। সেখানে মসজিদে জনসমাগম নিয়ে প্রশ্ন করাটা অত্যন্ত স্বাভাবিক এবং সময়োপযোগী। এই সংকটের সময় মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় নিয়ম-কানুন নিজ বাসায় পালন করতে কোন সমস্যা দেখছেন না।

ছবির উৎস, SOPA Images
দিল্লির নিজামুদ্দিন-এ তাবলীগ জামাতের সদর দফতর কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে
বিষয়টি একই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন সুমন, যিনি রাজশাহীর গোদাগাড়ীর বাসিন্দা:
''বিবিসি এমন ভাবে রিপোর্ট করছে যে, তাতে মনে হচ্ছে জুম্মার নামাজ পড়তে গিয়েই সবাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। চীন ইতালি যুক্তরাষ্ট্রে এত মানুষ জুম্মার নামাজ পড়তে যায় না তারপরও তারা এত আক্রান্ত কেন? অন্য উপায়েও তো করোনাভাইরাসে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, তাহলে শুধু নামাজ পড়তে যাওয়া নিয়ে এত কেন মাথা ব্যথা বিবিসির?''
নামাজ নিয়ে আমাদের বিশেষ কোন মাথা ব্যথা নেই মি. সুমন। ফুটবল ম্যাচ, সিনেমা, রেস্তোঁরা, মসজিদ, গির্জা যেখানেই লোকজনের ভিড় হবে, সেখানেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের মোক্ষম সম্ভাবনা। এ'সবই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মসজিদে প্রচুর লোক খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়েন, তাই এক যোগে অনেক মানুষের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণের সুযোগ থাকে। যেমন দেখা গেল সম্প্রতি ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ায় হয়ে যাওয়া তাবলীগ জামাতের অনুষ্ঠানে। দুটা থেকেই অনেকে অসুস্থ হয়েছেন, এবং তারা বাড়ি ফিরে আরো কতজনকে যে সংক্রমিত করেছেন, তা এখনো বোঝা যাচ্ছে না। অন্যান্য মুসলিম দেশ যুক্তিসংগত কারণেই মসজিদে নামাজ সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রেখেছে।

ছবির উৎস, AFP/Getty Images
মার্কিন রণতরীতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে অতি সত্বর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে লেখা চিঠি প্রকাশের পর ক্যাপ্টেন ক্রোজিয়ারকে সরিয়ে দেয়া হয়।
অবিশ্বাস থেকে একটি প্রশ্ন করেছেন রাজশাহীর বাগমারা থেকে অমরেশ কুমার পাল:
''বিবিসি বাংলাতে বলা হলো নতুন কোন ব্যক্তি আক্রান্ত হয়নি। একজনের মৃত্যু। বিবিসি বাংলা কি কোন তথ্য সংগ্রহ করে না? নাকি সরকার যে তথ্য প্রকাশ করছে সেটাই শুনে প্রচার করছে? আমার মনে হয় সরকার আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যার তথ্য গোপন করছে। যদি সরকারের পাশাপাশি বিবিসি বাংলাও তথ্য গোপন করে তাহলে আমরা কোথায় সঠিক তথ্য কোথায় পাব? যদি এমনটি হয়ে থাকে, যা বিবিসি বাংলার কাছে কাম্য মনে করি না।''
বিবিসি বাংলা কেন তথ্য গোপন করতে যাবে মি. পাল? আমাদের কাছে যে তথ্য আসে তার মধ্যে যতটুক যাচাই করতে পারি সেগুলোই প্রচার করা হয়। আর কয়জন আক্রান্ত হলেন আর কয়জন রোগী মারা গেলেন, এসব তথ্যের জন্য আমাদের সরকারের ওপরই নির্ভর করতে হয়। অন্য যে কোন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য নির্ভরযোগ্য হয় না, অনেক ক্ষেত্রে অনুমান-নির্ভর হয় এবং সেগুলো অসম্পূর্ণও হয়। আমাদের পক্ষে সারা বাংলাদেশে প্রতিটি মৃত্যু করোনাভাইরাস কি না, তা যাচাই করা সম্ভব না। কারণ, সেটা যাচাই করতে গেলে মৃত রোগীকে পরীক্ষা করতে হবে। সেটা কোন মিডিয়ার পক্ষে সম্ভব না।
কোয়ারেন্টিনে ইতালির বাঙালিরা
পরের চিঠি লিখেছেন খুলনার দাকোপ থেকে মুকুল সরদার:
''বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত রোগীর যে সংখ্যা দেয়া হচ্ছে, সেটি নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী দেশে ফিরে এসেছেন তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বা হোম কোয়ারেন্টিন যেমন নিশ্চিত করা যায়নি, তেমনি দশ দিনের ছুটিতে হাজার হাজার মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। কিন্তু ঢাকার বাইরে করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগীর টেস্টিং ফ্যাসিলিটি তেমন নেই। ঢাকার বাইরে দ্রুত টেস্টিং ফ্যাসিলিটি বাড়ানোটা খুবই জরুরি।''
আপনি মেইলটি চার-পাঁচ দিন আগে পাঠিয়েছিলেন মি. সরদার এবং এর মধ্যেই ঢাকার বাইরে নমুনা পরীক্ষা করার জন্য ৯টি কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সরকার টেস্টিং বৃদ্ধি করার জন্য কিছু পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছেন, তবে সেগুলো প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে অপ্রতুল বলেই আমার মনে হচ্ছে।
করোনা মোকাবেলায় ‘সামাজিক দূরত্ব’ বজায় রাখা কী এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ?
এবারে আমাদের টেলিভিশন অনুষ্ঠানে প্রচারিত একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন ঢাকার গেণ্ডারিয়া থেকে মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান:
''গত ৩০শে মার্চ টেলিভিশন অনুষ্ঠান বিবিসি প্রবাহে সামাজিক দূরত্ব নিয়ে অর্চি অতন্দ্রিলার সচেতনামুলক প্রতিবেদনটি দেখলাম। এটি এ মুহূর্তে খুব দরকার। তবে শুধু সরকারের পদক্ষেপের ওপর ভরসা করে থাকলেই চলবে না, জনগণকেও দায়িত্বশীল, সচেতন ও সাহসী হতে হবে। লকডাউনকে মানুষ ঈদের ছুটি মনে করে অনেকেই ঘরের বাইরে ইচ্ছেমত ঘোরাঘুরি করছে যা খুবই উদ্বেগ ও আতঙ্কের। সামাজিক বিচ্ছিন্নতা কার্যকর ও তদারকির জন্য সরকার সেনাবাহিনী নিযুক্ত করেছে যা করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই দরকার ছিল। আমি মনে করি কার্যকর সামাজিক দূরত্বের জন্য দরকার সাধারণ মানুষেরস্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা।''
আপনার শেষ মন্তব্য সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার মনে হয় মি. রহমান। জনস্বাস্থ্য সংকট মোকাবেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করে সাময়িকভাবে শৃংখলা বজায় রাখা যায়, কিন্তু তা কোন সমাধান হতে পারে না। সমাধান আসবে জনগণের অংশগ্রহণে, যেটা নিশ্চিত করার জন্য মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দেয়ার কৌশল ঠিক করা যত জরুরি, তেমনি মানুষকে আর্থিক সহায়তা দেয়া আরো জরুরি।
করোনাভাইরাস: মৃতের সংখ্যা ২ লাখের নিচে রাখতে মরিয়া যুক্তরাষ্ট্র
করোনাভাইরাস বিষয়টিকে ভিন্ন ভাবে দেখছেন ঢাকার হাবিব সাহেব:
''এই প্রথম বার বিবিসি বাংলাকে লিখছি। সারা বিশ্ব এখন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। তাদের মধ্যে ইরান অন্যতম। ইরানের উপর আমেরিকার নজিরবিহীন অবরোধের কারণে ইরানীরা অনেক দুর্দশার মধ্যে পতিত হয়েছে। খোদ আমেরিকায় আজ করোনাভাইরাস-এ হাজার হাজার লোক মারা যাচ্ছে। এটা সৃষ্টিকর্তার নির্মম প্রতিশোধ।''
আমি আপনার সাথে একমত না হাবিব সাহেব। অন্য যে কোন ভাইরাস বা জীবাণুর মত কোভিড-১৯ও প্রাকৃতিক একটি বিষয়। এ'ধরণের ক্ষুদ্র জীবাণু প্রকৃতিতেই থাকে, কিছু কিছু মানুষের মধ্যে সংক্রমণ হয়, তখন মানুষের শরীর সেগুলো মোকাবেলা করার ক্ষমতা অর্জন করে অথবা প্রতিরোধক ওষুধ আবিষ্কার করা হয়। তাছাড়া, করোনাভাইরাস যদি আমেরিকার ওপর সৃষ্টিকর্তার প্রতিশোধ হয়, তাহলে একই মহামারিতে ইরানে কেন প্রতিদিন দেড়'শ লোক মারা যাবে? কাজেই না, এটা কারো প্রতিশোধ নয়।
সব শেষে গোপালগঞ্জের ঘোড়াদাইড় থেকে ফয়সাল আহমেদ সিপন:
''করোনাভাইরাস মহামারির কারণে আজ সারা বিশ্ব শোচনীয় দুরাবস্থার খাদে পড়ে আছে। এ দুর্দিনে সবচাইতে অসহায় হয়ে পড়েছে সারাদেশের দিন এনে দিন খাওয়া শ্রমজীবী মানুষেরা। একদিকে বাড়ি থেকে বের হওয়া নিষেধ বলে রুটি-রুজি যোগাড়ের জন্যে কাজ করতে তাদের কোথাও যাওয়া হচ্ছে না, আবার অন্যদিকে ঘরেও মজুদ নেই কোন খাবার। এই অসহায় মানুষদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্যে মানবিক মানুষদের দ্বারা বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।''
সব কিছু বন্ধ করার ফলে দিন মজুররা চরম সংকটের মুখে পড়েছে, তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই মি. আহমেদ। তাদের সাহায্য করার জন্য কোন কার্যকরী উদ্যোগ যদি নেয়া হয়ে থাকে তাহলে তা অবশ্যই প্রশংসনীয়।
পাঠকদের জানিয়ে রাখি, রেডিওতে চিঠি-পত্রের আসর 'প্রীতিভাজনেষু' আপাতত বন্ধ আছে। তার জায়গায় প্রতি বুধবার রাতের অনুষ্ঠান পরিক্রমায় করোনাভাইরাস নিয়ে বিশেষ ফোন-ইন প্রচার করা হচ্ছে।
প্রাপ্তি স্বীকার:
বিলকিছ আক্তার, কাউনিয়া, রংপুর।
মোহাম্মদত শিমুল বিল্লাল বাপ্পী, কপিলমুনি খুলনা ।
মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, সৈয়দপুর, নীলফামারী।
কামনাশীষ বিশ্বাস, যশোর।
জি. এম. মেসবাহুল ইসলাম, যশোর।
মোহাম্মদ রিপন খাঁন, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ।
মোহাম্মদ সেলিম মিয়া রাজ, বেনুঘাট চওড়ার হাট, রংপুর।
রিপন বিশ্বাস, শ্রীপুর, মাগুরা।
রাজিব হুসাইন, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ।
দেব প্রসাদ রায়, রংপুর।
মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল।