সুনামগঞ্জে একদিনে ৪৯ টি শিশুকিশোরকে আদালতের ১০টি শর্তে দেয়া অভিনব শাস্তি

ছবির উৎস, Getty Images
শাস্তি প্রাপ্তদের বয়স ১৪ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। (প্রতীকী ছবি)
বাংলাদেশের সুনামগঞ্জে বিভিন্ন অপরাধের জন্য একদিনে ৪৯টি শিশুকিশোরকে শাস্তি দিয়েছে জেলার শিশু আদালত।
তবে আদালতের শাস্তি শুনলেই যা মনে হয় এক্ষেত্রে বিষয়টি তেমন নয়।
শাস্তি হিসেবে এদের সংশোধনাগারে না পাঠিয়ে, সংশোধনের জন্য ১০ রকমের শর্ত দিয়েছেন বিচারক।
সুনামগঞ্জের শিশু আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নান্টু রায় বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, শাস্তি প্রাপ্তদের বয়স ১৪ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। যাদের মধ্যে কয়েকজন মেয়েও রয়েছে।
অভিভাবকের জিম্মায় থেকে তাদের এই ১০টি শর্ত পূরণ করতে হবে।
শর্তগুলোর বিস্তারিত জানিয়ে মি. রায় বলছেন, তাদের সবাইকে একটি জীবনী গ্রন্থ দেয়া হয়েছে যাতে বিভিন্ন মনিষীর জীবনকথা রয়েছে। এই বইটি তাদের পড়তে হবে।
এছাড়াও অভিভাবকদের নির্দেশ মেনে চলা, তাদের সেবাযত্ন করা, ২০টি করে গাছ লাগানো, সেগুলোর নিয়মিত পরিচর্যা করা, মাদক থেকে দূরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, ভবিষ্যতে কোন অপরাধে না জড়ানো, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা, নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করার শর্ত তাদের মেনে চলার কথা বলেছে আদালত।
সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেককেই এই দশটি শর্তই মানতে হবে।
এসব শিশুদের একটি অংশের অভিভাবকদের বিভিন্ন ধরনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। যেসব মামলায় তাদেরও অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মি. রায়।
ছবির উৎস, Getty Images
এই শিশুকিশোরদের ১০টি শর্ত পূরণ করতে হবে
তিনি জানিয়েছেন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের শিশু আদালতে আলাদা বিচার হয়েছে।
আরেকটি অংশ নিজেরাই নানা ধরনের মারামারিতে অংশ নেয়ায় তাদের শিশু আদালতে যেতে হয়েছে।
আদালত তাদের কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে না পাঠিয়ে তাদের বাবা-মায়ের কাছেই হস্তান্তর করেছে।
আদালত বলেছে সংশোধনাগারে অন্য কিশোর অপরাধীদের সংস্পর্শ থেকে দূরে, পারিবারিক পরিবেশের মধ্যে থেকেই এসব শিশুদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেবার জন্যেই এসব শর্ত।
বাংলাদেশে গত বছরের আগস্ট মাসে একটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ভেতরে তিনজন কিশোর নিহত ও ১৫ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।
ওই ঘটনায় আহত কিশোররা বলেছিলেন কেন্দ্রের আনসার সদস্যরা তাদের বেঁধে পেটান। তবে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
এসব কেন্দ্র থেকে শিশুদের পালিয়ে যাওয়ারও বহু ঘটনা রয়েছে।
এই ৪৯টি শিশুকিশোর তাদের দেয়া শর্ত সঠিকভাবে পালন করছে কিনা তা নিয়মিত তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জেলার প্রবেশন ও সমাজসেবা কর্মকর্তাকে।
আরো পড়ুন: