খুলনায় ভাঙচুরের ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি, ক্ষতিপূরণের আশ্বাস, গ্রেফতার বেড়ে ১১
- সানজানা চৌধুরী
- বিবিসি বাংলা, ঢাকা

খুলনার রূপসা উপজেলায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
খুলনার রূপসা উপজেলার শিয়ালি গ্রামে মন্দির, হিন্দু মালিকানাধীন দোকানপাট ও বসতভিটায় হামলার ঘটনার পর পুরো এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এলাকা জুড়ে পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন রাখা হয়েছে।
এদিকে ভাঙচুর ও সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে রোববার রাতে আরও একজনকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছেন রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরদার মোশাররফ হোসেন।
এ নিয়ে মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করা হলো। গ্রেফতার হওয়া সবাই পার্শ্ববর্তী চাঁদপুর গ্রামের বাাসিন্দা বলে তিনি জানান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে উত্তেজিত জনতা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কথা জানায়।
ছবির উৎস, Chittaranjan Sen
শনিবার বিকেলে ভাংচুরের শিকার হওয়া একটি মন্দিরের অভ্যন্তর
পরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ মহানগর, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ, ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা ।
এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন।
আরও পড়ুন:
রূপসা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া তাসনিম জানিয়েছেন, যারা ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
ভাংচুর করা মন্দির ও শ্মশানের সংস্কার করা হবে এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিগগিরই মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।
এছাড়া পুরো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে হৃদ্যতা বজায় রাখতে তারা কাজ করছেন বলেও তিনি জানান।
ছবির উৎস, Alamgir Hannan
খুলনায় অন্তত ৪টি মন্দির, দোকান, এবং একটি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়।
স্থানীয় সাংবাদিকদের পাঠানো কিছু ছবিতে দেখা গেছে, সেখানকার অন্তত ৪টি মন্দিরের প্রতিমা, শ্মশানের নানা উপকরণ, ছোট দোকান, এবং একটি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
স্থানীয় এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, হামলাকারীরা তার বাড়ি থেকে স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে গেছে।
ওই ঘটনায় রূপসা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শক্তিপদ বসু ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ২০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রূপসারে উপজেলা ও পৃলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় মসজিদে নামাজ চলার সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা 'গান-বাজনা' করছিলেন - এমন এক অভিযোগে দুই পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। তবে রূপসার ইউএনও বলেন, ওই দ্বন্দ্বের সমাধান সেদিনই হয়ে গিয়েছিল এবং ওই ঘটনার সাথে শনিবারের হামলার সম্পর্ক নেই।